বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

শোভা বিলাচ্ছে নাগলিঙ্গম

মেহেরপুর প্রতিনিধি

শোভা বিলাচ্ছে নাগলিঙ্গম

শহরের অদূরে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে তাহের ক্লিনিক অ্যান্ড লিনা ম্যাটসে ফুলে ফুলে শোভা বিলাচ্ছে নাগলিঙ্গম গাছ। এর সৌরভ মাতোয়ারা করে দিচ্ছে ফুল প্রেমীদের। নাগলিঙ্গম ৩৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। তবে এ গাছটির উচ্চতা ১৫ ফুটের একটু বেশি হবে। নাগলিঙ্গম গাছে যখন ফুল ফোটে তখন ফুল হতে অদ্ভুত মাদকতাময় গন্ধ বের হয়। এর ইংরেজি নাম ‘ক্যানন বল’ আর বৈজ্ঞানিক নাম ‘করোপিতা গুইয়াসেসিস’। এই গাছে ফুল ধরার পর বেলের মতো গোল গোল ব্যাস প্রায় ১৫ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার ফল ধরে। প্রায় তিন হাজার বছর আগে থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজায় নাগলিঙ্গম ফুল ব্যবহার করেন। বৌদ্ধদের মন্দিরেও এই ফুলের যথেষ্ট কদর রয়েছে। এ কারণে থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমারের বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গণে নাগলিঙ্গম গাছ বেশি দেখা যায়। ভেষজ গুণসম্পন্ন নাগলিঙ্গম গাছের ফুল, পাতা ও বাকলের নির্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ হয়। দ্রুত বর্ধনশীল নাগলিঙ্গম চারা রোপণের ১২-১৪ বছর পর গাছে ফুল ধরে। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে ফুল ফোটে। গাছের কাণ্ডভেদ করে বেরিয়ে আসে প্রায় ৭ ইঞ্চি দীর্ঘ অসংখ্য মঞ্জুরি। এক একটি মঞ্জুরিতে ১০-২০টি ফুল ক্রমান্বয়ে ফুটতে থাকে। মঞ্জুরির একদিকে নতুন ফুল ফোটে, অন্যদিকে পুরাতন ফুল ঝরে পড়ে। ফুলের রং অনেকটা লালচে কমলা বা লালচে গোলাপি হয়ে থাকে।

ফুলের মাঝে থাকে নাগের ফনা আকৃতির পরাগচক্র। বাংলাদেশে নাগলিঙ্গম খুব একটা দেখা যায় না। ঢাকার রমনা উদ্যান ও মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে রয়েছে কয়েকটি গাছ। এ ছাড়া ময়মনসিংহের গৌরীপুর, মুক্তাগাছা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, কক্সবাজার, বান্দরবান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, নটর ডেম কলেজ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এবং চন্দ্রিমা উদ্যানে বিভিন্ন বয়সী কয়েকটি নাগলিঙ্গম গাছ রয়েছে বলে জানা যায়। মেহেরপুরে একটি ও গাংনীতে একটি গাছ রয়েছে। তবে গাংনীর গাছটিতে ফল ধরে না। গাছের মালিক ডা. আবুতাহের সিদ্দিকী জানান, মেহেরপুরের প্রয়াত ডাক্তার রজব আলীর নেশা ছিল দুর্লভ গাছ এনে বিভিন্ন স্থানে লাগানো। আজ থেকে ১৫ বছর আগে তিনি একটি চারা গাছ নিয়ে এসে আমার ক্লিনিকের সামনে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে নিয়ে রোপণ করেন। এর কিছু দিন পর তিনি মারা যান। তার স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে আমি গাছটির পরিচর্যা করি। গাছটি গত তিন বছর ধরে ফুল ও ফল দিচ্ছে। ফুলগুলো দেখতে যেমন মনমুগ্ধকর তেমনি সকালে এর সুবাস। সুবাসে একটা মাদকতাভাব রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর