বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
সারা দেশে খুনোখুনি

আধিপত্য বিস্তারে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের সোনাপুরা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় রবিউল ইসলাম রনি মোল্লা (২৪) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। ওই হামলায় তার মা এবং দুই ভাইও গুরুতর আহত হন। আহত দুই ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ববিরোধের জের ধরে স্থানীয় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম ওরফে হাতকাটা মামুনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন হতাহতের স্বজনরা। নিহত রবিউল ইসলাম রনি মোল্লা ওই এলাকার ইয়াসিন মোল্লার ছেলে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার দুই সহোদর সোহেল মোল্লা (২৬) এবং তৌকির মোল্লা (২২)। হতাহতদের মামা মোস্তফা সিকদার জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হাতকাটা মামুনের সঙ্গে রনি মোল্লার বিরোধ চলছিল।

মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মামুনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০ জনের একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ রনির বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরের সামনের এবং পেছনের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে রনি, সোহেল ও তৌকির মোল্লাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। রক্ষা করতে গেলে তাদের মা মোর্শেদা বেগমকেও পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা।

এক পর্যায়ে তারা নগদ অর্থসহ বাসার যাবতীয় মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলার পর স্থানীয়রা তিন ভাইকে উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৩টার দিকে রনি মোল্লাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।

আহত অপর দুই ভাইকে হাসপাতালের পঞ্চমতলায় সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে দুই ভাইয়ের যথাযথ চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন সার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা। বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন জানান, হামলাকারী হাতকাটা মামুন এবং নিহত রনির সঙ্গে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে পূর্ববিরোধ ছিল। মামুুনের নামে বাকেরগঞ্জ থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। নিহত রনির নামেও থানায় ৪টি মামলা রয়েছে। পূর্ববিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার রাতে আকস্মিক মামুনের নেতৃত্বে রনির বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তারা পিটিয়ে ও কুপিয়ে একজনকে হত্যা এবং অপর দুজনকে আহত করে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন ওসি। নিহত রনি মোল্লা স্থানীয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে দলে কোনো বড় পদ-পদবি ছিল না। তিনি ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমানের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। অন্যদিকে হামলাকারী হাতকাটা মামুনও ক্ষমতাসীন দলের একজন সক্রিয় কর্মী এবং স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মীর মোহসীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর