শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বেনাপোল বন্দরে ভয়াবহ পণ্যজট

খালাসের অপেক্ষায় শত শত ভারতীয় ট্রাক

বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোল বন্দরে ভয়াবহ পণ্যজট

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল জায়গা সংকটের কারণে ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়েছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বন্দর টার্মিনাল, বিভিন্ন লিংক রোডসহ ঢাকা-কলকাতা এশিয়ান হাইওয়েতে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে আছে। ফলে রোদ গরমে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে পণ্যের গুণগত মান। ক্ষেত্র বিশেষ কোনো কোনো পণ্য ৮ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে বন্দর গোডাউনে নামাতে।

প্রতি বছর দেশের সিংহভাগ শিল্প কলকারখানা ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির মালামালের পাশাপাশি কেমিক্যাল, মোটর পার্টস, গাড়ির চেসিসসহ বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানি হয়ে থাকে এ বন্দর দিয়ে। বছরে এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি ও ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। সরকারের কোষাগারে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। তবে দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল বন্দরে জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে তৈরি হচ্ছে তীব্র পণ্যজট। এতে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় দেশের স্থল ও রেলপথে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয় ভারত থেকে। গত দুই বছর করোনা মহামারি ধকলের পর এ বছর আমদানি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু বন্দরের গুদামে জায়গা সংকটের কারণে চাহিদামতো ট্রাক ঢুকতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রম। আমদানি-রপ্তানি গেট হতে বন্দরের গুদাম পর্যন্ত জ্যাম হয়ে থাকছে প্রতিনিয়ত। ফলে ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করছে ঢিলেঢালা ভাবে। দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল বন্দরে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা না থাকায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৫-৬ হাজার আমদানির ট্রাক এক মাসেরও বেশি দিন দাঁড়িয়ে থাকে। ওই ট্রাকের মধ্যে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র ২৫০-৩০০ ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করছে। বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা যায়, ১৫০০ কোটি টাকার ১৭৫ একর জমি (নতুন শেড, কন্টিনার টার্মিনাল, হেভি স্টক ইয়ার্ড নির্মাণে জন্য) অধিগ্রহণের বিষয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি প্রকল্পটির কোনো অগ্রগতি হয়নি। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বেনাপোল বন্দরে পণ্যবাহী ভারতীয় একটি ট্রাক ৮ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল স্থলবন্দরের জায়গা সংকটসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে বরাবর আবেদন করেও কোনো আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। বেনাপোল স্থলবন্দরে ১৭৫ একর জমি অধিগ্রহণ পূর্বক সেখানে কমপক্ষে ৩০টি নতুন শেড, হেভি স্টক ইয়ার্ড, কোল্ড স্টোর নির্মাণ জরুরি। তাই এখনই বন্দর সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক আবদুল জলিল বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় পণ্য আমদানি-রপ্তানি কয়েকগুণ বেড়েছে। স্থলবন্দরে পণ্যের ধারণক্ষমতা ৫৯ হাজার টন।

সর্বশেষ খবর