শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

হাসপাতালে ৯৯ ভাগ শয্যা ফাঁকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাসপাতালে ৯৯ ভাগ শয্যা ফাঁকা

দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এক মাসের বেশি সময় ধরে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শনাক্তের হার রয়েছে ১ শতাংশের নিচে। ফলে ফাঁকা হয়ে গেছে বিশেষায়িত কভিড হাসপাতাল ও কভিড ইউনিটগুলো। গতকাল সারা দেশের কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর ১৫ হাজার ১৭টি শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি ছিল মাত্র ১৪৫ জন। ৯৯ দশমিক ০৩ শতাংশ শয্যাই ছিল ফাঁকা। অনেক হাসপাতালে এক মাসেও ভর্তি হয়নি কোনো করোনা রোগী। ফলে অলস পড়ে আছে কভিড রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত শয্যা ও চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকলে মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, কভিড রোগী নেই বললেই চলে। করোনায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, আইসিইউ, এইচ ডিইউ শয্যা অন্য রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। তার পরও অনেক শয্যা ফাঁকা রাখা হয়েছে কভিড রোগীর জন্য। হাসপাতালের একজন সিনিয়র নার্স জানান, রোগী না থাকায় মাসখানেক আগে তাকে করোনা ওয়ার্ড থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে বদলি করা হয়েছে। তবে কভিড-১৯ ডেডিকেটেড ডিএনসিসি হাসপাতালে কভিড রোগী না থাকলেও নন-কভিড রোগীর চিকিৎসা চলছে না। গতকাল দুপুরে ১০টি এইচ ডিইউ শয্যা ছাড়া আর কোথাও রোগী ভর্তি ছিল না। ৫৫৪টি সাধারণ শয্যা, ২১২টি আইসিইউ পুরোপুরি ফাঁকা ছিল। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কভিড ডেডিকেটেড চিকিৎসাকেন্দ্র হওয়ায় বন্ধও করা যাচ্ছে না, অন্য রোগীদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের

সিদ্ধান্ত আসেনি।  যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়া ঠেকাতে কিছুদিন পর পর এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে শিফট করা হচ্ছে। প্রয়োজন না হলেও চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. বেলাল হোসেন বলেন, রোগী কমে আসায় সারা দেশে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত সরকারি হাসপাতালগুলোতে কভিডের পাশাপাশি নন-কভিড রোগীদের চিকিৎসার নির্দেশনা আগেই দেওয়া হয়েছে। করোনা রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত আইসিইউ, এইচ ডিইউ অন্য রোগীদের জন্য ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। শুধু যেসব হাসপাতালে শুধু করোনা চিকিৎসা দেওয়া হতো সেগুলোর ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪৮৫টি সাধারণ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিলেন মাত্র তিনজন। এ ছাড়া ২০টি আইসিইউর বিপরীতে পাঁচজন ও ৪০টি এইচ ডিইউ শয্যার বিপরীতে একজন ভর্তি ছিলেন। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরীর ১৫টি কভিড ডেডিকেটেড সরকারি হাসপাতালের ৩ হাজার ১৯৪টি সাধারণ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিলেন ৫৩ জন। ৩৫১টি আইসিইউর বিপরীতে আটজন ও ৪২৩টি এইচ ডিইউ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিলেন ১৫ জন। এ ছাড়া ৩২টি বেসরকারি হাসপাতালের ১ হাজার ৪৩০টি সাধারণ শয্যার বিপরীতে তিনজন, ৩৭০টি আইসিইউর বিপরীতে তিনজন ও ১০৭টি এইচ ডিইউ শয্যার বিপরীতে চারজন রোগী ভর্তি ছিল। সারা দেশের সরকারি- বেসরকারি হাসপাতালের ১৩ হাজার ১৩৮টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ১৩ হাজার ৩৩টি, ১ হাজার ১৭৪টি আইসিইউর মধ্যে ১ হাজার ১৫৭টি ও ৭০৫টি এইচ ডিইউ শয্যার মধ্যে ৬৮২টি ফাঁকা ছিল।

সর্বশেষ খবর