রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বাংলাদেশি পর্যটক খরায় জমেনি কলকাতার ঈদবাজার

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ভারতের কলকাতায় নেই বাংলাদেশি পর্যটকের ঢল। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের কেনাকাটা জমে ওঠেনি বাংলাদেশিদের প্রিয় বাজার কলকাতার নিউমার্কেটে। এ বছর নিউমার্কেট চত্বর কার্যত খাঁখাঁ চেহারা ধারণ করেছে। স্থানীয় হোটেল, গেস্টহাউস ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে পোশাক বিক্রেতা, চুড়ি-মালা সবাই হাপিত্যেশ করে বসে আছেন বাংলাদেশি ক্রেতার আশায়। আর যে কজন এসেছেন তারা পণ্যের দাম বেশি অথচ মান খারাপ বলে অভিযোগ করছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকদের সবচেয়ে বড় জমায়েত হয় নিউমার্কেট চত্বরে। কারণ এখানে পিন থেকে এলিফ্যান্ট সবকিছুই পাওয়া যায় এক ছাতার নিচে। আর সে কারণেই বাংলাদেশিদের প্রধান আকর্ষণ নিউমার্কেট। এ ছাড়া ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, লিন্ডসে স্ট্রিট, মির্জা গালিব স্ট্রিট, মারকুইস স্ট্রিট, সদর স্ট্রিটে বাংলাদেশি পর্যটকের ভিড়ে সরগরম হয়। পরিসংখ্যান বলছে, করোনার আগে যে-সংখ্যক বাংলাদেশি পর্যটকের উপস্থিতি ছিল এবার তার চার ভাগের এক ভাগে ঠেকেছে।

মেজর ইন্টারন্যাশনাল গেস্টহাউসের মালিক সাঈদ রায়নাদি বলেন, ‘এবারে বাংলাদেশি পর্যটক অনেক কম। অন্যবার প্রথম থেকে ২০ রোজা পর্যন্ত অনেক ভিড় থাকে। সে তুলনায় ভিড় নেই বললেই চলে। তবে যেহেতু পর্যটক ভিসা চালু হয়ে গেছে, সে ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে পর্যটক আসতে শুরু করেছেন।’ শিগগিরই বাজারও স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। নিউমার্কেটের পোশাক বিক্রেতা মো. ইশতেখার আলী বলেন ‘আমাদের কেনাবেচা মূলত বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল। তাঁরা এলে প্রচুর জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যান। তখন মনে হয় ঈদের বাজার সত্যিই শুরু হয়ে গেছে। এ বছর বেচাকেনা একেবারেই নেই। বাংলাদেশি পর্যটকরা এখনো সেভাবে আসছেন না।’ আগামী দিনেও পরিস্থিতি ফিরবে বলে মনে করেন না তিনি। আরেক পোশাক বিক্রেতা মোহাম্মদ আফ্রিদি বলেন, ‘বাজার অনেক খারাপ। প্রথমত বাংলাদেশ থেকে পর্যটকরা আসছেন না, দ্বিতীয়ত স্থানীয়রাও করোনার ভয়ে ভিড় এড়াচ্ছেন। গত দুই বছর করোনা ও লকডাউনের কারণে বাজার একেবারেই শেষ। আর চলতি বছরও অবস্থাটা খুব ঢিলেঢালা। যে রকম থাকার কথা সে রকম নেই।’

নিউমার্কেটের ফুটপাথের চুড়ি-মালা বিক্রেতা আক্তার হোসেন বলেন, ‘ব্যবসা একেবারেই ভালো নয়। দুই বছর আগেও ঈদের সময় বাংলাদেশি পর্যটকের যে ঢল থাকত তা এবার নেই। ফলে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। ভারত সরকার পর্যটক ভিসা চালু করায় বাংলাদেশ থেকে পর্যটকরা এলে ব্যবসা কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পারে। নইলে সমস্যা থেকেই যাবে।’

নিউমার্কেটের হোটেলে অবস্থান করা ঢাকার এস এম সাইদুল ইসলাম নামে এক পর্যটক বলেন, ‘এবার আগের চেয়ে জিনিসের দাম প্রায় তিন গুণ বেশি। কোনো কিছুতেই হাত দেওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশে যে জিনিস ১০ টাকা এখানে তা ২০ রুপি। ঈদের আগে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ এখানে আসেন কম দামে ভালো পণ্য কেনার আশায়। এখানে এসে দেখা যায় জিনিসের মান খারাপ, দামও বেশি।’

 

সর্বশেষ খবর