বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যায় যাবজ্জীবন, প্রথম স্ত্রীকে খুনের মামলা চলছে

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী চাম্পা খাতুনকে হত্যার দায়ে স্বামী শাহীন মণ্ডলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দিন এই আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শাহীন মণ্ডল উপজেলার তেলো পশ্চিমপাড়া এলাকার রইচ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে।

শাহীন মণ্ডলের (৩৬) বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলা বিচারাধীন। এ অবস্থায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বনপাড়া কালিকাপুর গ্রামের আফছার মিয়াজীর মেয়ে চাম্পা খাতুনের সঙ্গে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বিয়ে হয় একই উপজেলার তেলো পশ্চিমপাড়া মহল্লার রইচ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে শাহীন মণ্ডলের। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী শাহীন মণ্ডল ও তার পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রী চাম্পা খাতুন তাদের চাহিদা মতো যৌতুক তার বাবার কাছ থেকে এনে দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই বিরোধসহ মারধরের ঘটনা ঘটত। এর একপর্যায়ে গত ২০ জানুয়ারি ২০১৬ সাল সকালে মেয়েকে মেরে ঘরের মধ্যে রেখে দিয়েছে বলে মেয়ের প্রতিবেশীদের মাধ্যমে সংবাদ পায় চাম্পার বাবা আফছার মিয়াজী। পরে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে ঘরের মধ্যে গলা কাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা। এরপরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত চাম্পা খাতুনের বাবা আফছার মিয়াজী বাদী হয়ে মেয়ের স্বামী শাহীন মণ্ডল ও তার শ্বশুর, শাশুড়িকে অভিযুক্ত করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে চাম্পা খাতুনের শ্বশুর ও শাশুড়ির নাম বাদ দিয়ে শুধু স্বামী শাহীন মণ্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে আদালতে। দীর্ঘ কয়েক বছর মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক শাহীন মণ্ডলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আরিফুর রহমান সরকার বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে পৃথক একটি মামলা বর্তমানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। শিগগিরই ওই মামলারও রায় ঘোষণা করা হতে পারে। আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, মামলায় কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন না। রায়ে তারা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তার মক্কেল রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। আসামির বিরুদ্ধে অন্য একটি হত্যা মামলা চালু থাকার বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেন।

সর্বশেষ খবর