রবিবার, ১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

নেতা-কর্মীর দৃষ্টি গণভবনে

আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কাউন্সিল নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে, কুমিল্লা সিটি নির্বাচন নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা

রফিকুল ইসলাম রনি

নেতা-কর্মীর দৃষ্টি গণভবনে

আগামী ৭ মে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হবে। দীর্ঘ আড়াই বছর পর পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী সংসদের নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেবেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল, মেয়াদোত্তীর্ণ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে এ বৈঠক থেকে। ফলে সারা দেশের দলীয় নেতা-কর্মীদের দৃষ্টি এখন গণভবনের দিকে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গঠনতন্ত্র অনুসারে চলতি বছরের ডিসেম্বরে দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল হওয়ার কথা। যথা সময়ে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে নাকি আগে বা পরে হবে সে সিদ্ধান্ত আসবে ওই দিনের বৈঠক থেকে। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করা হতে পারে। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সাংগঠনিক, রাজনৈতিক, দিবসভিত্তিক কর্মসূচি চূড়ান্ত, আর্থ-সামাজিক চলমান ইস্যু নিয়ে কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হবে। ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন, তৃণমূলে বিভক্তির রাজনীতি দূরীকরণ, এমপি-মন্ত্রীদের বলয় ভাঙাসহ সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিতে পারেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘসময় করোনা মহামারির পর এটাই প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটির বৈঠক। এর আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কমসংখ্যক নেতাকে নিয়ে বৈঠক হতো। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আগামী ৭ মে পূর্ণাঙ্গ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’ 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি জানিয়েছেন, দলের জাতীয় কাউন্সিল আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। গঠনতন্ত্র অনুসারে কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ ডিসেম্বরের ২০ তারিখে শেষ হবে। দলের ভিতরে সম্মেলন দুই থেকে তিন মাস এগিয়ে আসার গুঞ্জন রয়েছে। দলের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে দীর্ঘদিন হয়ে গেল। এসব সংগঠনের সম্মেলন এ বছরই করতে হবে।

দীর্ঘদিন পর দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত আসতে পারে- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতিটি বৈঠকেই রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা হয়। এবারও তাই হবে। তবে প্রতিবারের চেয়ে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সামনে জাতীয় কাউন্সিল, কয়েকটি সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। সেসব বিষয়ে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আশা করছি।’

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চারটি পদ শূন্য রয়েছে। কার্যনির্বাহী বৈঠকে নতুন সদস্যের নাম ঘোষণা করতে পারেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই, অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে তৃণমূল নেতা-কর্মীর দূরত্ব কমানোর দিক-নিদের্শনা দেবেন দলীয় প্রধান। এ ছাড়া আসন্ন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হতে পারে। প্রতিবার এ সিটি আওয়ামী লীগের হাত ছাড়া হয়ে আসছে, কীভাবে উত্তরণ হবে সে বিষয়ে বিশ্লেষণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর কার্যনিবাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। করোনাকালীন দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, টিকা সংগ্রহ থেকে শুরু করে শক্তহাতে করোনা মোকাবিলা করার জন্য দলীয়ভাবে আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ জানাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ বৈঠকে নেত্রী অনেকগুলো সিদ্ধান্ত দেবেন। এরমধ্যে যেখানে সাংগঠনিক জটিলতা আছে, সেগুলো সমাধান করতে বলবেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই, বিজয়ী হওয়া এবং বিএনপিসহ সরকারবিরোধী জোটের আন্দোলন মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনা হবে।’

সর্বশেষ খবর