রবিবার, ৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

জাফলংবিমুখ পর্যটক, চা বাগানে ফের লাঞ্ছিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে পর্যটক হয়রানি যেন থামছেই না। জাফলংয়ের পর এবার চা-বাগানে বেড়াতে গিয়ে হয়রানি ও হামলার শিকার হয়েছেন পর্যটকরা। হয়রানির ঘটনার পর আশঙ্কাজনক হারে কমেছে জাফলংয়ে পর্যটকের সংখ্যা। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে সিলেটের পর্যটন খাতে ধস নামার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বৃহস্পতিবার জাফলংয়ে প্রবেশ টিকিট কাটা নিয়ে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা একটি পরিবারের ওপর হামলা চালান উপজেলা প্রশাসনের স্বেচ্ছাসেবীরা। স্বেচ্ছাসেবী নামক সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ওই পরিবারের পুরুষ ও নারী সদস্যদের রড ও পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত দুজনসহ পাঁচজনকে আটক করে। হামলার ঘটনার পর এক সপ্তাহের জন্য জাফলংয়ে প্রবেশ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতিক্রমে উপজেলা প্রশাসনে কর্তৃক আদায়কৃত এ প্রবেশ ফি সম্পূর্ণ বেআইনি উল্লেখ করে টিকিট প্রথা বাতিলের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এদিকে বৃহস্পতিবার হামলার ঘটনার পর আশঙ্কাজনক হারে জাফলংয়ে পর্যটকের সংখ্যা কমেছে। এদিকে জাফলংয়ের ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় হলেও সিলেটে থামেনি পর্যটক হয়রানি। সিলেট মহানগরের পার্শ্ববর্তী মালনীছড়া ও লাক্কাতুড়া চা-বাগানে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা প্রতিদিনই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বাগানের ভিতর প্রবেশে চাঁদা দাবি করছেন শ্রমিকরা। পর্যটকদের কাছে জনপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করেন তারা। চাঁদা না দিলে ঢুকতে দেওয়া হয় না পর্যটকদের। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে পর্যটকরা দুর্ব্যবহার ও হামলার শিকার হচ্ছেন। ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন সিলেট মহানগরের পার্শ্ববর্তী চা-বাগানগুলোয় বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটে। বিশেষ করে বিকালে পর্যটকের ঢল নামে চা-বাগানগুলোয়। কিন্তু বাগানে প্রবেশ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই পর্যটকদের সঙ্গে চা-শ্রমিকদের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। গতকাল বিকালে মালনীছড়া বাগানে বেড়াতে যান পর্যটকরা। এ সময় বাগানে প্রবেশের জন্য চাঁদা দাবি করেন শ্রমিকরা। দাবি করা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান কয়েকজন পর্যটক। ফলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালান। পরে অন্যান্য পর্যটক ও কয়েকজন চা-শ্রমিকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চা-বাগানে পর্যটক হয়রানি প্রসঙ্গে জানতে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. মাঈনুল জাকিরকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

এ প্রসঙ্গে পর্যটনবিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ ইনবাউন্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডি ইনবাউন্ড) পরিচালক জহিরুল কবীর চৌধুরী শিরু বলেন, ‘দেশের পর্যটন স্পটগুলোর পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সেবার মানের ওপর পর্যটনশিল্পের বিকাশ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনেকাংশে নির্ভরশীল। সিলেটে এবার ঈদের ছুটিতে যেসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে তাতে এখানকার পর্যটন খাতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এখনই এর প্রতিকার করা না গেলে আমাদের বড় মাশুল গুনতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর