শিরোনাম
রবিবার, ৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

লোকালয় চষে বেড়াচ্ছে বাঘ আতঙ্ক

বাগেরহাট প্রতিনিধি

লোকালয় চষে বেড়াচ্ছে বাঘ আতঙ্ক

লোকালয় চষে বেড়াচ্ছে সুন্দরবনের বাঘ। গ্রামীণ মেঠোপথে পায়ের ছাপ অজানা আতঙ্ক উসকে দিচ্ছে। জেলার শরণখোলা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে হানা দেয় বাঘ। এখন সুন্দরবন থেকে লোকালয়ের ১০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে পড়েছে বাঘ। শুক্রবার রাত ৮টায় শরণখোলার খোন্তকাটা ইউনিয়নের বানিয়াখালী গ্রামে বাঘ দেখে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এরপর মাইকিং করে গ্রামবাসীকে সতর্ক করা হয়। গতকাল সকালে বাঘটির পায়ের ছাপ দেখে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে সুন্দরবন বিভাগ ও এলাকাবাসী। গত দুই রাতে উপজেলার ভিন্ন ভিন্ন গ্রামে বাঘ দেখতে পাওয়ায় উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

শরণখোলার খোন্তকাটা ইউপি সদস্য ছিদ্দিক গাজী জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সুন্দরবন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পুবে শরণখোলার পশ্চিম বানিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠ থেকে গরু আনতে যান স্থানীয় কামাল হোসেন হাওলাদার। এ সময় টর্চলাইটের আলোয় তিনি গরুর পাশে একটি বাঘ দেখতে পান। তার ডাকচিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাড়া করলে বাঘটি পালিয়ে যায়। সকালে পায়ের ছাপ দেখে বাঘটি খোঁজা হচ্ছে বলে জানান এই ইউপি সদস্য। তিনি বলেন, এলাকার মানুষের মধ্যে বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। লোকজন রাতে বাঘের ভয়ে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো আবদুস সবুর জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সুন্দরবনসংলগ্ন শরণখোলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য আবুল হোসেন খানের মাছের ঘেরে পাহারা দেওয়ার সময় টর্চলাইটের আলোয় একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পাওয়া যায়। ঘেরের লোকজনের ডাকচিৎকারে বাঘটি পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সুন্দরবন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পুবে বানিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে গরু আনতে গিয়ে টর্চলাইটের আলোয় একটি বাঘ দেখতে পান কৃষক কামাল হোসেন হাওলাদার। আজ (শনিবার) সকালে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বনরক্ষীরা বাঘটির পায়ের ছাপ দেখে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এর আগে ৩১ মার্চ রাজাপুর গ্রামের সোবাহান হাওলাদারের বাড়িতে ঢুকে একটি মহিষকে আক্রমণ করে বাঘ। সুন্দরবনের ভোলা নদী ভরাট হওয়ায় সুন্দরবনসংলগ্ন এ লোকালয়ে মাঝেমধ্যে বাঘ ঢুকে পড়ছে। মাসাধিককাল ধরে প্রায়ই শরণখোলায় সুন্দরবনসংলগ্ন রাজাপুর, দাসেরভারানি, খেজুরবাড়িয়া, টগড়াবাড়ীর লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ছে। এখন বাঘ লোকালয়ের ১০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। যা বন বিভাগকে চিন্তায় ফেলেছে। লোকালয়ে আসা বাঘ যাতে মানুষের হাতে মারা না পড়ে বা বাঘটি জানমালের কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য বনকর্মীরা সব সময় সতর্ক রয়েছেন। সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, লোকালয়ে সুন্দরবনের বাঘ ঢুকে পড়ার বিষয়ে কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রুপ (সিপিজি) ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের (ভিটিআরটি) সহযোগিতায় গ্রামে গ্রামে মাইকিংসহ জনসাধারণকে সচেতন করে চলছে। লোকালয়ের বাঘ সুন্দরবনে ফিরিয়ে আনতে বনরক্ষীদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন জানান, পুলিশের একটি দল বানিয়াখালী গ্রাম পরিদর্শন করেছে। এরপর মাইকিং করে গ্রামবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর