মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

আয়বৈষম্যের কারণে অপরাধ বাড়ছে

খন্দকার ফারজানা রহমান

আয়বৈষম্যের কারণে অপরাধ বাড়ছে

বর্তমান সময়ে যে সামাজিক পরিবর্তনগুলো, সেখানে একটি বড় বিষয় হচ্ছে ‘সোশ্যাল ডিজঅর্গানাইজেশন’। সমাজে গরিব ও ধনীর মধ্যে আয়ের বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। এসব সোশ্যাল ডিজঅর্গানাইজেশন, অর্থনৈতিক প্রান্তিকতা, আয়বৈষম্যের কারণে সামাজিক অপরাধ বাড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দুই সন্তানসহ মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের অভিভাবককে সুস্থভাবে ঢাকা শহরে একটি ভালো বাসায় থাকতে মাসে অন্তত ১ লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে মানুষের আয় ও ক্রয়ক্ষমতার সংকুচিত অবস্থা। আর এ দুটোর মধ্যে ভারসাম্য আনতে গিয়ে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। দেশে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক প্রান্তিকতাও বাড়ছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ তুলনামূলক বেশি খারাপ অবস্থায় আছে। করোনা মহামারিতে মানুষ নিজের যা সঞ্চয় ছিল তা-ও শেষ করে ফেলেছে। এ জায়গাগুলোয় কাজ করতে গিয়ে দেখা যায় যে সোশ্যাল ডিজঅর্গানাইজেশন প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কাজ করছে। যদি কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অর্থনৈতিক প্রান্তিকতার মধ্য দিয়ে যান, তিনি একটু ভালোভাবে বাঁচতে চেষ্টা করলেই তাকে তখন বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হচ্ছে।

ফারজানা রহমান বলেন, এ ধরনের অপরাধ দমন করতে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজরদারি করতে হবে। বিশেষ করে প্রায় ২০০ টাকায় প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনে খেতে গিয়ে অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন। অবস্থা এমন যে মানুষকে হয়তো খাবার সেদ্ধ করে খেতে হবে। কিন্তু একজন মানুষের জীবনধারণের পদ্ধতি তো আর বললেই হুট করে বদলে ফেলা সম্ভব নয়। এজন্য বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। মানুষের আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারেরও উচিত ভর্তুকি দেওয়া। এ বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে আমাদের সেন্ট্রাল অথরিটির কাজ। একইভাবে যে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করে, তাদেরও নির্মূল করতে হবে। এখানে একটি মাল্টিপল স্টেকহোল্ডারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর