মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতা নিয়ে উৎকণ্ঠা দুই সিটিতে

১৭২ স্পট চিহ্নিত, চলছে কাজ

হাসান ইমন

এবার বর্ষা মৌসুমে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৭২টি হটস্পট চিহ্নিত করেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৩০ ও উত্তরের ৪২টি। এসব স্থানে বিগত বছরগুলোয় বৃষ্টির পানি জমেছিল। এবার এসব স্থানের সংস্কার কাজ করছে সংস্থা দুটি। এ ছাড়া ড্রেন, বক্স কালভার্ট ও খাল পরিষ্কার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে দুই সিটি করপোরেশন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রকৌশল বিভাগ জানায়, জলাবদ্ধপ্রবণ ১৩০টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০টিরও বেশি স্থানের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে কিছু অংশের কাজ চলছে, আবার কিছু অংশের কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া জলজট নিরসনে ড্রেন, বক্স কালভার্ট ও খাল পরিষ্কারের কার্যক্রম চলছে। অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্রে জানা যায়, গত বছর জলাবদ্ধপ্রবণ ১০৩টি স্থান ছিল। এবার এসব স্থানের মধ্যে ৬১টির সংস্কার করা হয়েছে। বাকি ৪২টি স্থান সংস্কারের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া খালের সীমানা পিলার স্থাপনের কাজ চলছে। এই কাজগুলো সম্পন্ন হলে খাল সংস্কারের কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া ড্রেন পরিষ্কারের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এবার জলাবদ্ধতাপ্রবণ স্থান হিসেবে আমরা ৪২টি স্থান চিহ্নিত করেছি। এগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। এ ছাড়া খাল সংস্কারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডগুলোতে জলাবদ্ধতা হতে পারে। কারণ এসব এলাকায় এখনো কাজ শুরু হয়নি।

তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি র‌্যাপিড অ্যাকশন টিম গঠন করা হবে। যারা অঞ্চলভিত্তিক সমস্যা সমাধানে দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। এই টিম আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে গঠন করা হবে। তবে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার জলাবদ্ধতা অনেক কম হবে বলে প্রত্যাশা করেন মেয়র। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জলাবদ্ধতা নিরসনে খালগুলোকে সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করেছি। হস্তান্তরের পর তারা কিছু অবৈধ উচ্ছেদ করেছে। কিছু কিছু খাল সংস্কার করেছে। তাতে করে গত বছর আমরা অবস্থার কিছু উন্নতি লক্ষ্য করেছি। এ বছর এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন কয়েকটা খালে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানে আমরাও অংশ নিয়েছি। তাই স্বাভাবিকভাবে আমরা মনে করি এ বছরও আমরা মোকাবিলা করতে পারি। তবে জলবায়ুর ওপর তো কারও হাত নেই।’

ডিএনসিসির ৪২ হটস্পট : খালের ডেড স্পট হিসেবে শনাক্ত করা খননের উদ্যোগ নেওয়া জায়গাগুলোর মধ্যে রয়েছে : মোহাম্মদিয়া হাউজিংয়ের রোড ৩ থেকে ৪ পর্যন্ত, রোড ৬, রহিম ব্যাপারী ঘাটের উত্তর পাশ, দক্ষিণ পাশ, মোহাম্মদিয়া  হোমস লিমিটেডের সামনে, আদাবর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর অফিসের সামনে, অফিসের বিপরীত পাশে, কল্যাণপুর পাম্প স্টেশনের জলাধারের পূর্বপাশ, উত্তর-পশ্চিম পাশ, ইস্টার্ন হাউজিংয়ে জি ব্লক রোড নং ২-এর মাথা থেকে বাইতুল ইবাদাহ জামে মসজিদ পর্যন্ত, প্লট নং কে ৭ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সামনে, এল ব্লক বকুল তলা, হোটেল সংলগ্ন, কালসি স্টিল ব্রিজের উত্তর পাশ, এসটিএস থেকে পলাশনগর সবুজবাংলা নতুন ব্রিজ, প্যারিস রোড খালের ডি ব্লক, মিরপুর ১০, ঝুটপট্টি, এভিনিউ ৫, সি ব্লক, মিরপুর ১১, মদিনা নগর এভিনিউ ৫, সি ব্লক, রামপুরা ব্লক এ, রোড ৯, বাড়ি নং- ৬/বি/১, দক্ষিণ বিশিল, তৃতীয় কলোনি, বাড়ি-৬৫/৪/এ, পঙ্গু হাসপাতাল সংলগ্ন পূর্বপাশ, কল্যাণপুর পাম্প স্টেশনের জলাধার, আবদুল্লাহপুর স্লুইস গেট থেকে উত্তর থানা ব্রিজ পর্যন্ত, উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে চন্ডালভোগ ব্রিজ পর্যন্ত, ফুলবাড়িয়া টেক পাড়া থেকে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত, আনন্দবাজার থেকে ভাঙা ব্রিজ, বাশেরপুল হাবিবুল্লাহ রোডের সামনে, দিগন্ত পেট্রোল পাম্প থেকে কালশী স্ট্রিল ব্রিজ, কালশী রোড ব্রিজ থেকে দক্ষিণ দিকে, মসজিদুল জুমা কমপ্লেক্স থেকে কালশী মেইন রোড, কালশী ব্রিজের উত্তর পাশে কাঁচা রাস্তার কর্নারে, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবনের পশ্চিম পাশ, ঢাকা রিয়েল এস্টেটের পুরনো দুটি কালভার্টের নিচে এবং কাদিরাবাদ হাউজিং রোড ২, ৫ ও ৬।

ডিএসসিসির ১৩০টি হটস্পট : ঢাকা দক্ষিণের ১৩০টি জলাবদ্ধপ্রবণ এলাকার মধ্যে ৭০টির বেশি স্থানের সংস্কার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে গুলবাগ, মৌচাক মোড়, শান্তিনগর, যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার, পোস্তগোলা করিমুল্লাহবাগ থেকে শ্মশানঘাট পর্যন্ত, শ্যামপুর শিল্প এলাকার ১০, ২০, ২২ ও ২৩ নম্বর রোড, দক্ষিণ দনিয়া মিনাবাগ, পাটেরবাগ সড়ক, বায়তুল জান্নাত মসজিদ সড়কসহ বেশ কিছু স্থানের সংস্কার কাজ চলছে। এ ছাড়া ঢালকানগর এলাকা, আলমগঞ্জ রোড, নর্থ ব্রুক হল লেন, পাতলা খান লেন, মায়াকানন, মুগদা হাসপাতালের সামনে, নয়াপল্টন, ফকিরাপুলের বক্স কালভার্ট রোড, পল্টন মডেল থানার সামনে, সোবহানবাগের তল্লাবাগ, নারিকেলবাড়ি, ইগলুর গলিসহ আরও কিছু স্থানের সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়।

 

সর্বশেষ খবর