মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

গৃহস্থালি পণ্যের আড়ালে আনা অস্ত্র নিয়ে ধূম্রজাল

ফের পরীক্ষার জন্য ঢাকায়

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বৈদেশিক ডাকের মাধ্যমে ইতালি থেকে পাঠানো দুটি পিস্তল নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের ব্যালিস্টিক পরীক্ষায় জব্দ পিস্তল দুটি ‘আগ্নেয়াস্ত্র’ নয় উল্লেখ করায় বিভ্রান্তিতে পড়েছে পুলিশ। পরে জব্দ অস্ত্রগুলো প্রাণঘাতী ‘আগ্নেয়াস্ত্র’ কি না তা নিশ্চিত হতে পাঠানো হয়েছে ঢাকা সিআইডির ল্যাবে। সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, ‘বুলেট নিক্ষেপের সক্ষমতা এবং ফায়ারিংয়ের পর আওয়াজ হওয়ার সক্ষমতা থাকলেই কোনো অস্ত্রকে আগ্নেয়াস্ত্র শ্রেণিভুক্ত করা হয়।  ইতালি থেকে পাঠানো পিস্তল দুটির শব্দের সক্ষমতা থাকলেও বুলেট নিক্ষেপের সক্ষমতা ছিল না। এ ছাড়া পিস্তল দুটি প্রাণঘাতী নয়। তাই ব্যালিস্টিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে তা আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি।’ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিএমপির বন্দর থানার এসআই ফয়সাল সরওয়ার বলেন, ‘ব্যালিস্টিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে দুই পিস্তলকে আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা না হলেও সেগুলো সচল বলা হয়েছে। যা সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে উন্নত পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি দিয়ে ঢাকার সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। ওই পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা যাবে।’ ইতালি থেকে পাঠানো অস্ত্রের ব্যালিস্টিক পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠায় বন্দর থানা পুলিশ। গত ১৩ এপ্রিল ফরেনসিক ল্যাবের ব্যালিস্টিক বিশারদ এসআই গোলাম আহমদ প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, জব্দ করা পিস্তল দুটি ব্ল্যাংক ফায়ারিং পিস্তল। এগুলো দিয়ে ফায়ারের কোনো প্রোজেক্টাইল নিক্ষেপ করা যায় না। তাই এগুলো আগ্নেয়াস্ত্র নয়। তবে পিস্তল দুটি বর্তমানে সচল আছে। জব্দ করা খেলার পিস্তল দুটির বিষয়ে বলা হয়, এগুলো এয়ারসফট পিস্তল। এগুলো দিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট গ্যাসের চাপের শক্তিতে প্রোজেক্টাইল নিক্ষেপ করা যায় না। তাই এগুলো আগ্নেয়াস্ত্র নয়। এ ছাড়া কাতুর্জগুলো প্রোজেক্টাইলবিহীন। সিআইডির ব্যালিস্টিক পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ২২ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফের পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করলে সেগুলো পরীক্ষার জন্য ঢাকা সিআইডিতে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২০ ফেব্রুয়ারি বৈদেশিক ডাকে করে গৃহস্থালি পণ্যের আড়ালে আসা একটি ‘অস্ত্রের চালান’ জব্দ করে কাস্টমস। ওই চালান থেকে একটি করে নাইন এমএম পিস্তল, এইট এমএম পিস্তল এবং দুটি খেলার পিস্তল জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নগরীর বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই চালানের প্রাপক আগ্রাবাদ এলাকার কামরুল হাসান এবং প্রেরক ইতালি প্রবাসী রাজিব বড়ুয়াকে আসামি করা হয়। পরে ওই চালানের প্রাপক চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১’র অফিস সহকারী কামরুল হাসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজিব বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর