বুধবার, ১১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ওয়াকওয়ে এখন পর্যটন কেন্দ্র

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর

ওয়াকওয়ে এখন পর্যটন কেন্দ্র

ভ্রমণপিপাসুদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পদ্মাপাড়ের পায়ে হাঁটা (ওয়াকওয়ে) পাকা সড়ক ‘জয় বাংলা এভিনিউ’। প্রতিদিনই বিনোদনের জন্য হাজারো মানুষ পরিবার নিয়ে ভিড় করছে এখানে। পদ্মার পলিমিশ্রিত পানিতে সমুদ্রসৈকতের বিনোদন অনুভব করছেন তারা। শত বছরের পদ্মার ভয়াল ভাঙন রোধ করে ডান তীরের ১০ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের ‘জয় বাংলা এভিনিউ নড়িয়া’ নামকরণ করে গত ২৬ মার্চ উদ্বোধন করা হয়। এর পর থেকেই সেখানে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। শরীয়তপুর ও আশপাশ জেলার ভ্রমণপ্রেমীরা সপরিবারে এসে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন। আনন্দের মাত্রা বাড়াতে ক্যামেরা ও মোবাইলে ছবি, সেলফি তুলে স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি করছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো। সেখানে বসেছে ফাস্টফুডের অনেক দোকান। সুলভ মূল্যে মিলছে বাংলা ও চায়নিজ খাবার। ভ্রমণপ্রেমী ফিরোজ, কলি, ইসরাত জাহান, নিশিতা ইমরোজ, রিফাত, শিশু নিসু, খুশবু বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমরা জয় বাংলা এভিনিউতে ঘুরতে এসেছি। জায়গাটা অনেক সুন্দর। তাই ছবি ও সেলফি তুলছি। বিভিন্ন ধরনের খাবারও খেয়েছি।’ ঘুরতে আসা নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শফিকুল ইসলাম রাজীব বলেন, ‘নড়িয়া তথা শরীয়তপুরে ঘোরার মতো স্থান খুবই অপ্রতুল। নড়িয়ায় বেড়িবাঁধ ও ওয়াকওয়ে হওয়ায় দর্শনীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।’ সরেজমিন দেখা গেছে, দর্শনার্থীরা ওয়াকওয়েতে হেঁটে, বাঁধের পাশে বেঞ্চে বা নদীর তীরে ফেলে রাখা ব্লকের ওপর বসে পদ্মার পানিতে পা ভিজিয়ে সময় পার করছেন। পদ্মাপাড়ের এমন অনিন্দ্যসুন্দর স্মৃতি ধরে রাখতে প্রিয়জনের সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত অনেকেই। পদ্মায় সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখে অনেকেই এ ‘জয় বাংলা এভিনিউ’কে বলছেন মিনি কক্সবাজার। শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, ‘পদ্মার ডান তীররক্ষা প্রকল্পের আওতায় জয় বাংলা এভিনিউর কাজ শেষ পর্যায়ে। তিন বছরে নড়িয়ার পদ্মাপাড়ে একটি বাড়িও বর্ষায় ভাঙেনি। জয় বাংলা এভিনিউর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ পর্যায়ে। এখানে সোডিয়াম বাতি, ঝাউ গাছ, ওয়াকওয়েতে টাইলস, নদীপাড়ের সিঁড়ি ভ্রমণপিপাসুদের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সব মিলে তিন বছর আগের ভয়াল পদ্মাপাড় এখন আনন্দমুখর নতুন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।’ নড়িয়ার কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিহির চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রমত্তা পদ্মার ভাঙন রোধ করে স্থায়ীভাবে তীর সংরক্ষণের পাশাপাশি সৌন্দর্য বাড়িয়ে গড়ে তোলা হয়েছে জয় বাংলা এভিনিউ। এখন আর পদ্মাপাড়ে কান্নার শব্দ শোনা যায় না, শোনা যায় আনন্দধ্বনি।’ পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মার ভাঙন রোধে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়েছেন বলেই আজ নড়িয়া ও জাজিরাকে নতুন পর্যটন এলাকায় পরিণত করা সম্ভব হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জাজিরা-নড়িয়া উপজেলার পদ্মা নদীর ডান তীররক্ষা প্রকল্পের আওতায় ১০ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে জয় বাংলা এভিনিউকে পর্যটন এলাকা করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর