বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্ষতিগ্রস্ত ৫ হাজার গ্রাহক দুই দিন ধরে বিক্ষোভ

৪০ কোটি টাকা আত্মসাতে গ্রিন বার্ডের মালিক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর রামপুরায় প্রায় ৫ হাজার গ্রাহকের অন্তত ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড। মঙ্গলবার খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে অবস্থিত ওই সমিতির অফিস ঘেরাও দিয়ে গ্রাহকরা বিক্ষোভ করতে থাকলে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আলাউদ্দিন হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। সেই পাওনা টাকা ফেরতের দাবিতে গতকাল মেরাদিয়া ও পরে রামপুরা থানার সামনে অবস্থান নেন হাজারো গ্রাহক।

পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারী গ্রাহকদের মধ্যে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদের মাধ্যমে তথ্য কাগজে-কলমে পাওনা টাকার হিসাব চলছে। পুলিশ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছে। অনেকেই টাকা দিয়েছেন কিন্তু রসিদ নেই আমরা সেগুলোও সংগ্রহ করছি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ওই মামলায় আলাউদ্দিন হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হবে।

বিক্ষোভকারী গ্রাহকরা জানান, মঙ্গলবার রাতেই প্রায় ৫ হাজার গ্রাহকের ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। গ্রাহকদের বেশির ভাগই নিম্নবিত্তের। দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশের লোভে টাকা নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছেন না। এ জন্য মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অফিস ঘেরাও করেন গ্রাহকরা। এতে অবরুদ্ধ হন মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। পরে রাতেই পুলিশ গিয়ে তাকে হেফাজতে নিয়ে নেয়। গতকাল সকালে প্রথমে মেরাদিয়ার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন গ্রাহকরা। পরে পুলিশের অনুরোধে রাস্তা ছাড়লেও পরবর্তীতে রামপুরা থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এ বিষয়ে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের কার্যালয় খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকায়। এর মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। তিনি এটিকে সমবায় সমিতি হিসেবে পরিচালনা করছিলেন। অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্তরা এ সমিতিতে টাকা জমা রাখছিলেন। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, মালিক আলাউদ্দিন তাদের প্রলোভন দেখিয়েছিলেন, ব্যাংকের চেয়ে অনেক বেশি মুনাফা দেবেন। এখন মালিক আলাউদ্দিন মুনাফা তো দূরে থাক জমানো টাকাও ফেরত দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় কার্যালয় ঘেরাও করেন গ্রাহকরা। আজও (গতকাল) থানার সামনে পাওনা টাকার দাবিতে গ্রাহকরা অবস্থান নিয়েছেন। অভিযুক্ত আলাউদ্দিন হোসেনকে থানা হেফাজতে মঙ্গলবার রাতেই আনা হয়েছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের টাকা ফেরতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত গ্রাহকদের দাবি পাওনা টাকার পরিমাণ কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকা। আর মালিক আলাউদ্দিন হোসেন স্বীকার করেছেন ৩০ কোটি। আলাউদ্দিন হোসেনের সব সম্পত্তি পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছি। পাশাপাশি অনেকেই টাকা জমা দিয়েছেন কিন্তু রসিদ নেই আমরা সেগুলো সংগ্রহ করছি। কেউ যেন তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হয়। প্রতারণার এ ঘটনায় রামপুরা থানায় আলাউদ্দিন হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও ওসি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর