বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
সিজিএস জরিপ

২৩ শতাংশ সাংবাদিক হুমকির সম্মুখীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ শতাংশ সাংবাদিক মহামারিকালে কাজ করার সময় বাহ্যিক হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন। ১৩ শতাংশ সাংবাদিক তাদের কর্তৃপক্ষের বাধার কারণে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেননি। করোনার সময়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক সাংবাদিকতা এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ-সিজিএসের জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। গত মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিজিএস। জরিপের তথ্যে বলা হয়, দেশের শতকরা ৭৯ ভাগ সাংবাদিক মনে করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাধা সৃষ্টি করছে। এশিয়া ফাউন্ডেশন এবং ইউকেএইড-এর সহযোগিতায় ১০০ জন সাংবাদিকের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করে।

জরিপের লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের সাংবাদিকদের ওপর কভিড-১৯ মহামারির প্রভাব অনুসন্ধান করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের মহামারির জন্য তাদের প্রতি মূল্যায়ন করা। সিজিএসের জরিপে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্রমাবনতির চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের ৭৯ শতাংশ বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে একটি বাধা ছিল। ২৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর মতে, তারা মহামারিকালে কাজ করার সময় বাহ্যিক হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন। ১৩ শতাংশ সাংবাদিক তাদের কর্তৃপক্ষের বাধার কারণে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেনি। জরিপে আরও বলা হয়েছে, করোনার সময়ে ৩৬ শতাংশ সাংবাদিক তাদের মূল বেতনের অর্ধেক পেয়েছেন। বাকি ২৪ শতাংশ সাংবাদিক মাসিক বেতন পুরোটাই পেয়েছেন কিন্তু অনিয়মিতভাবে। ৪ শতাংশ সাংবাদিক মহামারির কারণে তাদের চাকরি হারিয়েছেন।

এই সময়ে ৬০ শতাংশ সাংবাদিক বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানান। সিজিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির সময় ৩৪ শতাংশ সাংবাদিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মাত্র ১০ শতাংশ সাংবাদিক কভিড-১৯ মহামারি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সিজিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব একটি উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জরিপটি ইঙ্গিত করে যে, উত্তরদাতাদের প্রায় অর্ধেক (৪৮%) স্বাস্থ্য সাংবাদিকতার তাত্ত্বিক বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত নন। জরিপে অংশ নেওয়া সাংবাদিকদের ৮৮ শতাংশ বলছেন, তারা দুর্যোগ বা মহামারি পরিস্থিতির সময় মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনের জন্য কোনো প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন নি।

জরিপে উত্তরদাতাদের মতামত বিশ্লেষণ করে যে কোনো দুর্যোগ বা মহামারির সময় সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত করার জন্য কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সাংবাদিকদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, টিকা এবং সঠিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার মতো উপযুক্ত আর্থিক ও মানসিক সহায়তা নিশ্চিত করা। প্রতিটি সম্ভাব্য ঝুঁকি কমানোর ওপর জোর দিয়ে নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং এমন পরিবেশ তৈরি করা যেখানে সাংবাদিকরা কোনো অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চাপ ছাড়াই কাজ করতে পারেন। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের প্রতিকূলতা মোকাবিলায় নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে সিজিএস ‘দ্য ফোর্থ এস্টেট : আন্ডার দ্য শ্যাডো অব রেস্ট্রিকশন অ্যান্ড দ্য সার্চ ফর ওয়েজ ফরোয়ার্ড’ শিরোনামে একটি প্রকল্প পরিচালনা করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর