বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট চাই । মাতলুব আহমাদ

খাদ্যপণ্যের সব ভ্যাট ট্যাক্স মওকুফ রাখা উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাদ্যপণ্যের সব ভ্যাট ট্যাক্স মওকুফ রাখা উচিত

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, নিটল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই -এর সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেছেন, কভিড সংকট আমরা কাটিয়ে উঠেছি। কিন্তু কভিড-১৯ এর কারণে অর্থনীতির যেসব খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার সব এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। কিছু খাত হয়তো ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তবে বেশিরভাগ খাত এখনো সংকট থেকে বের হতে পারেনি। তিনি বলেন, তবে কভিড সংকটের চেয়ে এখন আমাদের সামনে বড় সংকট ডলার ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর কারণে খাদ্যপণ্যের দর মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই আগামী বাজেটে নিম্ন আয়ের ও দরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।

এবার কেমন চাই- বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ প্রশ্নের উত্তরে মাতলুব আহমাদ বলেন, আমাদের সামনে এখন বড় ধাক্কা ডলার সংকট। যা কভিডের ধাক্কার চেয়েও বেশি। প্রতিদিন সংকট বাড়ছে। এলসি করা যাচ্ছে না ডলার সংকটে। ব্যবসায়ীরা বেশি দামে ডলার কিনছে। এটা সামনে আরও বাড়বে। যেসব প্রতিষ্ঠান আমদানিনির্ভর বাণিজ্য করে তারা কঠিন পরিস্থিতির মুখে রয়েছে। ভবিষ্যৎ কোথায় যায় সেটা বলা যায় না। কভিড সমস্যা আশা করি কাটিয়ে উঠেছি। কভিডের কারণে যেসব প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা সমস্যায় পড়েছিল তাদের অনেকে এখন স্বাভাবিক হয়েছে। তবে বেশিরভাগের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। এর বড় কারণ ডলার সংকট। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি বলেন, সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ইতোমধ্যে। এরমধ্যে লাক্সারি আইটেম আমদানি সীমিত করেছে। বিশেষ জরুরি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে সরকারি কর্মকর্তাদের। এটা ভালো উদ্যোগ। তবে পুরো ব্যবসার জন্য এতেই সংকট কাটবে না। ব্যবসায়ীদের ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ অর্থ রেখে এলসি করতে হচ্ছে। আমদানিনির্ভর কোম্পানিগুলোর সেটা করে ব্যবসা চালু রাখা কঠিন হবে। আর্থিক খাতে সব স্বাভাবিক করতে হলে যে কোনো উপায়ে ডলারের সংকট মেটাতে হবে। এজন্য আগামী বাজেটে কার্যকর দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, আমাদের সামনে আরেকটি বড় ধাক্কা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দর বাড়ছে। প্রতিদিন বাড়ছে। এমনকি জ্বালানির দর বাড়ছে। যা সরাসরি খাদ্যপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ সংকটে পড়তে পারে। মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি হয়ে গেছে। ১০০ টাকার পণ্য ১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। যাদের সীমিত বা নির্ধারিত আয় তারা কোনোভাবেই চলতে পারবে না। তাই আগামী বাজেটে এ নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করেই বাজেট প্রণয়ন করতে হবে। সব ধরনের খাদ্যপণ্যে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে খাদ্যপণ্যের ওপর ভর্তুকি দিতে হবে। কম মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করতে হবে। নিম্ন আয়ের মানুষদের যেভাবেই হোক স্বস্তি দিতেই হবে। তিনি বলেন, দেশের উৎপাদনশীল খাত বা শিল্প খাতের জন্য সরকারের বিশেষ প্যাকেজ থাকতে হবে।

যেন উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা যায়। মানুষের কাছে কম মূল্যে সহজে পণ্য পৌঁছানো যায়। এ জন্য কারখানার মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ককর যতটুকু সম্ভব কমানো হবে। নির্ধারিত কিছু ক্ষেত্রে অন্তত ছয় মাস পুরো ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। তবেই উৎপাদন যেমন স্বাভাবিক থাকবে, নিত্যপণ্যের দর মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। জনগণকে মূল্যস্ফীতি থেকে রেহাই দিতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই এবার বাজেট প্রণয়ন করা উচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর