ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ না থামলে মার্কিন ডলার ও পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়বেই বলে মনে করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। তিনি বলেছেন, বিশ্বজুড়ে এখন সব কিছুর মূল্য প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশেও। শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যই নয়, শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামালের দামও বাড়ছে। তুলা ও সুতার দাম বাড়ছে। আবার মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি বাড়ছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৬ শতাংশ নেতিবাচক। আমদানি ও রপ্তানিও বাড়ছে। বাড়ছে ডলার সংকট। যুদ্ধের সমাধান না হলে ডলারের দাম বাড়বেই। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক এই সভাপতি বলেন, আগামী ৮ থেকে ১০ বছর গ্যাস দিয়ে চলবে বাংলাদেশ। এখন কৃষিতে সহায়তা দিতে সার উৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহার হচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক কাতার ও ওমান গ্যাস সরবরাহ করছে না। এই গ্যাস কিনতেও রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়বে।
এই শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক বলেন, কুইক রেন্টালের একসময় প্রয়োজন ছিল। এখন আর এর প্রয়োজনীয়তা নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা উচিত। অদক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা উচিত। গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারের ভুল পরিকল্পনার খেসারত শিল্প খাত বহন করতে পারে না। এ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে।
এ কে আজাদ বলেন, দেশে এখন ডলার সংকট চলছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এখন যদি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, উৎপাদন খরচ বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে ভোক্তার ওপর। তাই ডলারের যথেচ্ছ বা উল্টাপাল্টা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বিলাসী পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের সময় এসেছে। তিনি বলেন, আমদানি পণ্যের বেলায়ও করণীয় আছে। এসব পণ্যের নিজ দেশে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিলাসী পণ্যের মার্জিন বাড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, ডলার নিয়ে মার্কেটে গুজব ছড়ানো যাবে না। গুজব যে কোনো বড় অর্জনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। মানি মার্কেট খুবই স্পর্শকাতর। এখানে গুজব জন্মালে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে কার্ব মার্কেট খুবই ছোট। এখানেও সিন্ডিকেট থাকতে পারে। তবে মূল মার্কেট হলো ব্যাংক। সেখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব থাকলে চলবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলো খুবই কার্যকর ও সময়োপযোগী।