বুধবার, ২৫ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

আমদানি কমাতে ১৩৫ পণ্যে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি

দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠন ও আমদানি কমাতে ১৩৫টি পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বাড়াল সরকার। এই শুল্ক হার বাড়ানোর ব্যাখ্যা দিয়ে এনবিআর বলেছে- কভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনীতি পুনর্গঠন, বিলাসবহুল পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা ও আমদানি হ্রাসকরণ এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করতে সরকার শুল্ক করের হার বাড়িয়েছে। এই লক্ষ্যে বিদেশি ফল, ফুল, ফার্নিচার ও কসমেটিকস জাতীয় প্রায় ১৩৫টি এইচএস কোড ভুক্ত পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শূন্য শতাংশ ও ৩ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা আরডি আরোপ করা হয়েছে। নতুন এই শুল্ক কর ২৩ মে থেকে কার্যকর হওয়ার তথ্য দিয়েছে এনবিআর।

গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। সংস্থাটি শুল্কহার বাড়ানোর ব্যাখ্যায় আরও বলেছে- বাংলাদেশ ফুল ও ফল চাষে যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী। নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের ফলে দেশীয় ফুল ও ফল চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাবে এবং ফুল ও ফল চাষে উৎসাহিত হবে। এতে করে দেশের প্রান্তিক চাষিরা লাভবান হবেন এবং আমদানি নির্ভরতা কমবে। বর্তমানে দেশে উৎপাদিত ফার্নিচার ও কসমেটিকস যথেষ্ট মানসম্পন্ন এবং দেশের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ফার্নিচার ও কসমেটিকসে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের ফলে বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশীয় শিল্প বিকশিত হবে। এ ছাড়া এ ধরনের পণ্যের অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিতকরণের মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং সরকারের রাজস্ব আহরণে তা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। এর আগে গত ২৩ মে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এর ফলে আমদানিতে খরচ বাড়বে- তাজা ও শুকনো যে কোনো ধরনের আমদানি করা ফুল, অলংকার তৈরিতে আমদানি করা ফুল, বিভিন্ন ধরনের আর্টিফিশিয়াল ফুল এবং গাছের চারা কিংবা গাছের শাখা-প্রশাখা। ফলের মধ্যে রয়েছে- তাজা বা প্রক্রিয়াজাত আম, কলা, আঙ্গুর, ডুমুর, আনারস, অ্যাভোকাডো, পেয়ারা, ম্যাঙ্গোস্টিন বা গাব জাতীয় ফল, লেবু, তরমুজ, বরই, এপ্রিকট, চেরি জাতীয় ফল, হিমায়িত কিংবা প্রক্রিয়াজাত করা ফল বা ফলের বীজ ও মিক্সড ফলের খাবার। ফার্নিচারের জন্য আমদানি করা বাঁশ, পার্টস, বেতের ফার্নিচার এবং ফার্নিচারের জন্য আমদানি করা বিভিন্ন উপাদান। এ ছাড়া অফিস, রান্নাঘর, বেডরুমে ব্যবহৃত কাঠের ফার্নিচার, প্লাস্টিকের ফার্নিচার ও বিভিন্ন মেটাল ফার্নিচার। কসমেটিকসের মধ্যে পারফিউম, বিউটি ও মেকআপ প্রিপারেশন, দাঁতের ফ্লস, দাঁতের পাউডার, প্রিশেভ ও আফটার শেভ কসমেটিকস, চুলের জন্য প্রসাধনী ইত্যাদি। প্রসঙ্গত, চলমান বিশ্বমন্দা পরিস্থিতি সামাল দিতে ও সংকট উত্তরণে সম্প্রতি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে ৩ হাজার ৪০৮টি পণ্যে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা আরডি প্রযোজ্য রয়েছে। এসব পণ্যে সর্বনিম্ন ৩ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত আরডি প্রযোজ্য রয়েছে। এর মধ্যে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল আইটেম হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ আইটেমগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক রয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার উচ্চ ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনা অনুসরণ করে নতুন করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর