বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

কেমন আছে মাহালিরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

কেমন আছে মাহালিরা

চলছে ফলের মাস। বিশেষ করে দিনাজপুর অঞ্চলের লোভনীয় লিচু আর আমের মৌসুম। এ দুটিসহ ফলের মৌসুমে বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কদর বাড়ে বাঁশের ঝুড়ি বা টুকরির। ফল পরিবহনে ব্যবহৃত বাঁশের ঝুড়ি বা টুকরি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মাহালি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ। যদিও এসব হারাতে বসেছে বিকল্প প্লাস্টিকের ঝুড়ি বা ক্যারেট বাজারে আসায়। তবে সহজ ব্যবহারযোগ্য বাঁশের ঝুড়ি বা টুকরির প্রতি মানুষের আগ্রহ আছেই। তাই দেশ সেরা লিচুর বাজারজাতকরণে এই ঝুড়ি বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুর পৌর এলাকার কসবা আদিবাসীপাড়া, ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউপির জয়নগর গ্রামের মাহালি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ। তাদের এখন চলছে মৌসুম। এ সম্প্র্রদায়ের লোকজন এখনো কমবেশি সবাই বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী পেশা ধরে রেখেছেন। বাঁশের চটা দিয়ে চাটাই, কুলা, ঝুড়ি, ডালা, চাঙারি, টুকরি, ওড়া, চালুনি, খালইসহ নানা জিনিস তৈরি করেন তারা।

জয়নগর মাহালিপাড়ায় স্টেফান সরেন ও তার স্ত্রী মিনা মার্ডি, সুধীর মার্ডি ও তার স্ত্রী সোনা মণি হেমরম এবং সুজন মার্ডি, হেমচন্দ্র মার্ডি ও রমেশ মার্ডিসহ এবং কসবা আদিবাসীপাড়ার শ্যামল মারান্ডি, নির্মল মারান্ডি, দাউদ হাসদারা বংশপরম্পরায় ব্রিটিশ আমল থেকেই এ পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন। জেলার অন্য স্থানের মাহালি সম্প্রদায়ের লোকজনও এসব জিনিস তৈরি করেন।

স্টেফান সরেন ও সোনা মণি হেমরম জানান, এখন বাঁশের দাম বেশি। বাঁশ কিনে এনে দিনে স্বামী-স্ত্রী মিলে চার-পাঁচটি ঝুড়ি তৈরি করতে পারেন। সুধীর মার্ডি বলেন, একসময় প্রতিযোগিতা করতাম ঝুড়ি তৈরির। কিন্তু এখন সেই অবস্থা নেই, কারণ আমের জন্য প্লাস্টিকের ক্যারেট ব্যবহার করায় শুধুই লিচুর ঝুড়ি তৈরি করছি। তারা স্বামী-স্ত্রী দিনে ৮-১০টি ঝুড়ি তৈরি করেন। তিনি বলেন, ঝুড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ কমে গেছে।

বাঁশের দাম বাড়লেও ক্রেতারা আগের দামেই ঝুড়ি কিনতে চান এবং কেনেনও। সুধীর মার্ডি বলেন, এখন একটি বাঁশ কিনতে হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। একটি বাঁশ থেকে সর্বোচ্চ ছয়-সাতটি ঝুড়ি তৈরি হয়। প্রতিটি লিচুর ঝুড়ি বিক্রি হয় ৮০-৯০ টাকায়।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর