বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
ঢাকা-শিলিগুড়ি ট্রেন মিতালি এক্সপ্রেস চালু

অবসান ৫৭ বছরের অপেক্ষার

দীপক দেবনাথ, কলকাতা ও আবদুল বারী, নীলফামারী

অবসান ৫৭ বছরের অপেক্ষার

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থা আরও গতিশীল করতে মৈত্রী এক্সপ্রেস, বন্ধন এক্সপ্রেসের পর এবার চালু হলো মিতালি এক্সপ্রেস। অপেক্ষার অবসান হলো ৫৭ বছরের। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। গতকাল কলকাতার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪৩ মিনিটে দিল্লির রেলওয়ে বোর্ড কনফারেন্স হল থেকে মিতালি এক্সপ্রেসের ভার্চুয়ালি ফ্ল্যাগ অফ করেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এ সময় দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান, বাংলাদেশ রেলওয়ের এডিজি (অপারেশন) সরদার সাহদাত আলী, ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান বি কে ত্রিপাঠী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফ্ল্যাগ অফের পরই ট্রেনটি শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। যাত্রার প্রথম দিন ১২ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।

দিল্লিতে ভারতীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, আজ ভারতীয় রেলের জন্য খুবই খুশির দিন। এ এক্সপ্রেস ট্রেনটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে মাইলস্টোন হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি, আমাদের সীমিত ক্ষমতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে কিছু সহায়তা করার চেষ্টা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে দুই দেশের মধ্যে ৭০০ মালবাহী ট্রেন যাতায়াত করত, এখন সে সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১ হাজার ৬০০-এর কাছাকাছি হয়েছে। করোনাকালে ভারত ৪ হাজার টনের বেশি তরল অক্সিজেন সরবরাহ করেছে। এ সবই দুই দেশের বন্ধুত্বের দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধে বাংলাদেশের রেল সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তখন বিধ্বস্ত রেলকে ভারতের সহযোগিতায় আমরা পুনর্গঠন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘সপ্তাহে দুই দিন মিতালি ট্রেন চালু আছে; পরে সপ্তাহে পাঁচ দিন চালানোর জন্য ভারতের কাছ প্রস্তাব রাখব।’

নীলফামারী : বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ী রেলপথে যাত্রা করল তৃতীয় আন্তদেশীয় ট্রেন মিতালি এক্সপ্রেস। প্রায় ছয় দশক পর ট্রেনটি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে এসে ২টা ১২ মিনিটে নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ৩০ মিনিট বিরতির পর ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনের উদেশে ছেড়ে যায়। এ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন, এখন যাত্রী কম হলেও পরে বাড়বে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ উদ্বোধন করেন। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর কথা থাকলেও করোনাভাইরাস ও ভিসা জটিলতায় ট্রেন চলাচল বিলম্বিত হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তৃতীয় আন্তদেশীয় ট্রেন মিতালি এক্সপ্রেস চালু হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটটি হবে রেলের সবচেয়ে বড় রুট। ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যসহ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হবে এ রেলপথ।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর