শুক্রবার, ৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বাড়ছে সিসি ক্যামেরার চাহিদা

নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবহার হচ্ছে দোকান বাসা-বাড়ি অফিসে

হাসান ইমন

বাড়ছে সিসি ক্যামেরার চাহিদা

রাজধানীর তেজগাঁও নাখালপাড়ার সাত তলা বাড়ির মালিক সোহেল মাহমুদ। সম্প্রতি কয়েকটি বড় চুরির ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা বসাতে চান তিনি। সে জন্য মার্কেটে কিনতে এসেছেন। সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘ভবনের নিরাপত্তার জন্য কয়েকটি সিসি ক্যামেরা বসানো দরকার। কেউ যদি অপরাধ করতে চায়, তাহলে আমরা যেন তাদের শনাক্ত করতে পারি। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরার ভয়ে দুষ্কৃতকারীরা অপরাধ করার আগেও চিন্তা করবে একবার।’

বনশ্রীর মাইশা স্টোরের মালিক আবু নাছের বলেন, ‘গত কয়েক মাসে দোকানে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। কোনোভাবেই চুরি ঠেকানো যাচ্ছিল না। দোকানের কর্মচারী, নাকি সত্যিকারের চোর আসে তা যাচাইয়ের জন্য গত মাসে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছি। এখন দোকানে চুরি হয় না। ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছি।’ বিশেষ করে নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরার চাহিদা বাড়ছে। বাইরে তো বটেই, কর্মজীবী দম্পতি, যাদের শিশুসন্তানকে বাসায় কারও কাছে রেখে আসতে হয়, তারাও বাসার ভিতরে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে সিসি ক্যামেরা বসান। ফলে দূর থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাসায় নজরদারি করা যায়।

শুধু বাসা-বাড়ি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নয়, ব্যাংক-বীমা, হাসপাতাল, বেসরকারি অফিসসহ সব প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এ জন্য এই ক্যামেরার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। একসময় যে যন্ত্রটি অফিস কিংবা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার হতো, এখন তা আশ্রয় পেয়েছে মানুষের বাড়ির অন্দরে। কম দাম, সহজলভ্য, নিরাপত্তা, ক্যামেরায় রেকর্ড ভিডিও দূর থেকে মোবাইল ফোনে দেখার সুবিধা থকায় এর চাহিদা বাড়ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সিসি ক্যামেরার বাজার সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর। বাসা, অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য প্রতি বছর ১০ থেকে ১৫ লাখ সিসি ক্যামেরা বিক্রি হয়। আর এর প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয় চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে নিরাপত্তাপণ্যের বাজার বড় হচ্ছে। বিশেষ করে সিসিটিভির চাহিদা বাড়ছে। ২০১৩ সাল থেকে এর বাজার বাড়তে শুরু করে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররমের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক দশকে সিসি ক্যামেরার দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ১০ বছর আগে ১৫ হাজার টাকার নিচে কোনো ক্যামেরা পাওয়া না গেলেও এখন হাজার-বারো শ টাকাতেই মিলছে তা।

এ বিষয়ে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের সিসিটিভি মিউজিয়ামের ব্যবস্থাপক হিরু মিয়া বলেন, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরার চাহিদা আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি বেড়েছে। ছয় মাস ধরে বাসা-বাড়িতেও ক্যামেরা লাগানোর হার বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় আমদানিও বেশি হচ্ছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হলেও চীনের তৈরি সিসি ক্যামেরার দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে বেশি। প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ সেট সিসি ক্যামেরা বিক্রি হয়।

সর্বশেষ খবর