শুক্রবার, ৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

অভিযান আরও জোরদার হবে : খাদ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বোরো মৌসুমে চালের দাম বাড়ার প্রেক্ষাপটে ধান-চালের অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে সরকার। সারা দেশে ধান-চাল মজুদদারদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

গতকাল খাদ্যমন্ত্রী চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘বোরো-২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিংসংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময় সভায়’ তিনি এ ঘোষণা দেন। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, একটি মহল খাদ্য ঘাটতির বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে, তবে বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই। মজুদদারির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, এ অভিযান আরও জোরালো হবে। নিজস্ব মিল ও অনুমোদন না থাকলে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ধান-চালের ব্যবসায় যুক্ত না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, বড় বড় করপোরেট হাউস ধান-চাল সংগ্রহ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব মিল না থাকলে তারা যেন এ ব্যবসায় যুক্ত না হতে পারেন সেটা নিশ্চিতে ধান-চালের বাজারে নজরদারি বাড়াতে হবে।

প্রসঙ্গত, সারা দেশে ধান ও চালের অবৈধ মজুদ খুঁজে বের করতে ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে’ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্তের কথা মঙ্গলবার জানিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। সেদিন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানিয়েছিলেন, ১৯৫৬ সালের অ্যাসেনশিয়াল কমোডিটি অ্যাক্টে বলা আছে-কোন পর্যায়ে কতটুকু মজুদ রাখা যাবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালে এবং ২০২১ সালে দুটি আদেশ জারি করা হয়। সে আলোকেই অভিযান চলবে। জারি করা আদেশে বলা হয়- সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যবসায়ী এক টনের বেশি খাদ্যসামগ্রী তার অধিকারে রাখতে পারবেন না। অনুমোদিত ব্যবসায়ীদের মধ্যে পাইকারি ব্যবসায়ী সর্বোচ্চ ৩০০ টন ধান অথবা চাল ৩০ দিন পর্যন্ত মজুদ রাখতে পারবেন। খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৫ টন ধান অথবা চাল ১৫ দিন মজুদ রাখতে পারবেন। চালকল মালিকরা পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতার পাঁচগুণ ধান সর্বোচ্চ ৩০ দিন মজুদ রাখতে পারবেন। পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতার দ্বিগুণ চাল সর্বোচ্চ ১৫ দিন মজুদ রাখা যাবে। হাস্কিং মিল মালিকরা সর্বোচ্চ ১০০ টন ১৫ দিন মজুদ রাখতে পারবেন।

গতকাল খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ফুড গ্রেইন লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নে জোর দিতে হবে। কেউ যেন লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা না করতে পারে, অবৈধ মজুদ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট-১৯৭৪ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে চাল ও গমের দাম কমতে শুরু করেছে। সে দেশগুলো চাল ও গম রপ্তানি করবে মর্মে পত্রও দিচ্ছে। বাজার অস্থির করতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে ট্যাক্স কমিয়ে চাল আমদানি করা হবে।

গত বুধবার থেকে সারা দেশে অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। অবৈধ মজুদদারদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে একটি কন্ট্রোল রুমও খুলেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কন্ট্রোল রুমে অবৈধ মজুদের তথ্য জানাতে ০২-২২৩৩৮০২১১৩,  ০১৭৯০৪৯৯৯৪২ এবং ০১৭১৩০০৩৫০৬ নম্বরে কল করার কথা বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর