টানা বৃষ্টিতে নবরূপে হাসছে পাহাড়ি ঝরনা। স্রোতধারার গুঁড়ি গুঁড়ি জলকণাগুলো আকাশের দিকে উড়ে গিয়ে তৈরি করছে কুয়াশার আভা। শীতল কলতানে নিক্বণ ধ্বনির উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে চারপাশ। হ্রদ-পাহাড়ের সখ্যতায় এ এক হৃদয় নিংড়ানো সৌন্দর্য। রাঙামাটি জেলায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়ি ঝিরি-ঝরনা রয়েছে। তার মধ্যে শুধু রাঙামাটির বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নে রয়েছে ছোট বড় ১০০টি ঝরনা। শুভলংয়ের  গিরিনির্ঝর ঝরনাটি পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে ঝরনার জলধারা। ঝরনার অবিরাম পতনে সৃষ্ট নিক্বণ ধ্বনি বিমোহিত করে পর্যটকদের। দূর-দূরান্ত থেকে আগত দেশি-বিদেশি পর্যটকরা যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি অবসানে হারিয়ে যান ঝরনার জলধারায়। পাহাড়ে ঝরনার চঞ্চলা জলধারা পর্যটককে কাছে টানে খুব সহজে। রাঙামাটির শুভলং ঝরনা অর্থাৎ গিরিনির্ঝর ঝরনা দেখতে আসা পর্যটক আসাদ আহমদ জানান, ঝরনা সতেজতায় পাহাড়ি ঝিরিগুলো হয়ে ওঠে প্রাণচঞ্চল।  সাঁই সাঁই করে ধেয়ে চলা ঝিরির জলরাশি মিলেছে হ্রদের প্রাণে। সত্যি অসাধারণ দৃশ্য। যেন কল্পনায় আঁকা এক বাস্তব চিত্র।

শুভলং ঝরনার টিকিট বিক্রেতা রিন্টু চাকমা জানান, ঝরনা সবার কাছে প্রিয়। তাই রাঙামাটি বেড়াতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। শুষ্ক মৌসুমে বড় ঝরনাতে পানি একটু কম থাকলেও কৃত্রিম পানির ব্যবস্থা করা হয়। তবে ছোট ঝরনায় পানি থাকে ১২ মাসই। সম্প্রতি ঝরনার স্পটে পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, রাঙামাটির পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে অসংখ্য ঝরনা রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে এসব ঝরনা খুবই অপূর্ব। পর্যটকরাও ঝরনা ভালোবাসেন। কিন্তু দুর্গমতা ও নিরাপত্তার ভয়ে অনেকে ঝরনা স্পটে যেতে চান না। যেসব ঝরনা স্পটগুলো খুবই পরিচিত, সেগুলোও অরক্ষিত। গড়ে ওঠেনি পর্যটকদের বিনোদনের জন্য কোনো ব্যবস্থা।  রাঙামাটির ঝরনা স্পটগুলো চিহ্নিত করে যদি সুন্দরভাবে পর্যটন স্পট গড়ে তোলা যায়, তাহলেই অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধ হবে এ অঞ্চল। বৃদ্ধি পাবে পর্যটকও।