বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

কঠোর নিরাপত্তা কুমিল্লায়

সিটি নির্বাচনে মোতায়েন থাকবে পুলিশ র‌্যাব বিজিবি এপিবিএন ও আনসার

আকতারুজ্জামান

কঠোর নিরাপত্তা কুমিল্লায়

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এরই অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, আনসার ও ভিডিপি নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্বাচনে থাকবে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এ ছাড়াও র‌্যাবের সার্বক্ষণিক রিজার্ভ টিম তৎপর থাকবে। নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২২ এর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব শাহে এলিদ মাইনুল আমিন স্বাক্ষরিত এ পরিপত্র নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ জুন এ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তথ্যমতে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ প্রতি ভোট কেন্দ্রে চারজন পুলিশসহ (অস্ত্রসহ একজন এসআই/এএসআই ও তিন কনস্টেবল) আনসার-ভিডিপি মিলে মোট ১৬ জন এবং সাধারণ ভোট কেন্দ্রে তিনজন পুলিশসহ (অস্ত্রসহ একজন এসআই/এএসআই ও তিন কনস্টেবল) আনসার-ভিডিপি মিলে মোট ১৫ জন দায়িত্ব পালন করবে। সিটি নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার।

ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোটের পরের দিনসহ মোট চার দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে। তবে আনসার বাহিনী মোট পাঁচ দিন কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে। কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের জন্য র‌্যাবের একটি রিজার্ভ টিম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত প্রতিটি টিমে বিশেষ করে বিজিবির টহল দলে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স থাকবে। ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ দায়িত্ব প্রাপ্তদের নিরাপত্তা, ইভিএমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

নির্বাচনে আচরণবিধি পালন নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৩ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত মোট ২৭ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া কুমিল্লা সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ১৩ জুন থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত নয়জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী অপরাধ বিচারের দায়িত্বে থাকবেন। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও নির্বাচনী এলাকার সামগ্রিক নিরাপত্তা বিধানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগের দায়িত্বে থাকবেন রিটার্নিং অফিসার। তিনি বাস্তবতার নিরিখে পুলিশ সুপার, কুমিল্লা ও ক্ষেত্রমতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করবেন।

ভোটদানের জন্য ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারেন এবং ভোটদান শেষে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সে জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোবাইল টিমের মাধ্যমে নিবিড় টহলের ব্যবস্থা করবে। গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে প্রয়োজনে মেটাল ডিটেক্টর বা আর্চওয়ের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা যাবে। নির্বাচনের দিন ভোট গণনা শেষে রিটার্নিং অফিসারের কাছে ফলাফল না পৌঁছানো পর্যন্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও টহল জোরদার করা হবে।

পরিপত্রে বলা হয়, র‌্যাব, বিজিবি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। আর নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর। ভোট কেন্দ্রের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা পুলিশ বাহিনীর প্রধান কাজ থাকবে।

নির্বাচন উপলক্ষে ১৪ জুন মধ্যরাত থেকে ভোটের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত  নির্বাচনী এলাকায় নৌ-যান, স্থলযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ১৩ জুন মধ্যরাত থেকে ১৬ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী, নির্বাচনে বৈধ পরিদর্শক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, জরুরি সেবা কাজে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। এ ছাড়া ১৩ জুন সকাল ৬টা থেকে ১৭ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ভোট কেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া কেন্দ্রে কোনো প্রকার দাঙ্গা, সন্ত্রাস বা অনিয়ম সংঘটিত হলে বা আইন ও বিধির কোনো ব্যত্যয় ঘটলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করতে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে।

 

সর্বশেষ খবর