শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ওমানে স্কট পাঠিয়ে শুটার মুসাকে দেশে আনল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওমানে স্কট পাঠিয়ে শুটার মুসাকে দেশে আনল পুলিশ

রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা সুমন শিকদার ওরফে শুটার মুসাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ। ওমান থেকে আসা বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে দেশে আনা হয়। গতকাল বিকালে ফ্লাইটটি বিমানবন্দরে পৌঁছালে মুসাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মুসা ওমানে আটক হওয়ার পর দুই দেশের কূটনৈতিক সমঝোতায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এতে টিপু হত্যা মামলার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, টিপু কিলিং মিশনের ১২ দিন আগে দুবাইয়ে পালিয়ে যান মুসা। তদন্তে মুসার নাম আসার পরই বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশ থেকে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সহযোগিতা চাওয়া হয় ইন্টারপোলের। গত ৮ মে দুবাই থেকে ওমানে যান মুসা। ওমানের সালালায় অবস্থিত হজরত আইয়্যুব (আ.) এর মাজার জিয়ারত করে ১২ মে আবারও দুবাই ফিরছিলেন তিনি।

বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় সন্দেহ হয় ওমান পুলিশের। মুসার ছবির সঙ্গে ওই ব্যক্তির ছবি মিলিয়েও নিশ্চিত হতে পারছিল না দেশটির পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে ওমান পুলিশ যোগাযোগ করে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে। ওই ব্যক্তিই মুসা জানিয়ে আটক রাখার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ পুলিশ। এ অনুরোধে সাড়া দিয়ে মুসাকে আটক রাখে ওমান পুলিশ।

সূত্র জানায়, ওমানের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকায় কীভাবে মুসাকে ফেরত আনা হবে সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। মুসা যে অপরাধী সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চায় ওমান। একপর্যায়ে মুসাকে ফেরত দিতে রাজি হয়। এজন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে ফেরত আনার প্রস্তাব পাঠানো হয়। কারণ এটি না হলে সময় লাগত বেশি। পরিকল্পনা অনুসারে ডিবির মতিঝিল বিভাগের এডিসি মো. শাহিদুর রহমান রিপন, একই বিভাগের এডিসি মো. রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সদর দফতরের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিনকে নিয়ে একটি টিম গঠিত হয়। তারা গত রবিবার ওমানে পৌঁছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওমান পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। পরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বুধবার রাতে ওমানের মাস্কাট বিমানবন্দরে মুসাকে নিয়ে আসে ওমান পুলিশ। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের হাতে মুসাকে বুঝিয়ে দিয়ে বিমানের একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, মুসার বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল, পল্লবী থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্র মামলাসহ ১১টি মামলা রয়েছে। তিনি ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ-বিকাশ গ্রুপ ও মানিক গ্রুপের সদস্য। মতিঝিল এজিবি কলোনিতে যুবলীগ নেতা রিজভী হাসান ওরফে বোঁচা বাবু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মুসা। টিপুকে হত্যা করতে মুসার সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি করেন মতিঝিল ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক। এর মধ্যে প্রথমে মুসাকে ৯ লাখ টাকা দেন ফারুক। গত ১২ মার্চ টাকা নিয়ে দুবাই চলে যান মুসা।

সর্বশেষ খবর