শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বিলুপ্তির পথে গুইসাপ

নজরুল মৃধা, রংপুর

বিলুপ্তির পথে গুইসাপ

বিলুপ্তির পথে পরিবেশবান্ধব নিরীহ প্রাণী গুইসাপ। আগে গ্রামগঞ্জের ঝোপঝাড়ে সর্বত্রই দেখা যেত গুইসাপ। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে গুইসাপ বিলুপ্তির পথে রয়েছে। বনবিভাগের মতে, এই প্রাণীটির অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। রংপুর বনবিভাগ জানায়, আমাদের দেশে দুই ধরনের গুইসাপের দেখা মিলেছে। একটি সোনালি বর্ণের, আরেকটি কালো বর্ণের। সোনালি বর্ণের গুইসাপ প্রায় বিলুপ্তির পথে। নেই বললেই চলে। তবে গত মঙ্গলবার বিকালে রংপুর নগরীর অদূরে বৈরাগীগঞ্জ ব্রিজের পাশে সোনালি বর্ণের একটি গুইসাপের দেখা মেলে। এ ছাড়া কালো রঙের গুইসাপ মাঝেমধ্যে হাতে গোনা দু-একটি দেখা যায়। এই প্রাণীটিকে গুইসাপ বলা হলেও এটি গিরগিটি প্রজাতির প্রাণী। আবাসস্থল, খাদ্য সংকট, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের প্রিয় খাবার, কবিরাজদের ওষুধ তৈরি, চামড়া দিয়ে ভ্যানিটি ব্যাগসহ বিভিন্ন ব্যবহার্য পণ্য তৈরিসহ নানা কারণে এই প্রাণী বিপন্ন প্রাণীদের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এই বিপন্নের পেছনে মূলত মানুষই দায়ী বলে মনে করেন প্রাণী ও পরিবেশবিদরা।

গুইসাপ ৪ ফুট থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত দৈর্ঘ্য হতে পারে। ওজন ৫ কেজি থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়। এরা সাঁতরাতে ও গাছে উঠতে খুব পটু। গুইসাপ মাটির গর্তে, উইটিবি, গাছের কোটরে বা ফাটলে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু তাদের আবাসস্থানগুলো আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় তারা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারছে না। সাধারণত এ সাপ ক্ষতিকর পোকামাকড়, কাঁকড়া, শামুক, ইঁদুর, পচা-গলা প্রাণীদেহ, ব্যাঙ ও পাখি ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে। সুযোগ পেলে হাঁস-মুরগিও এদের খাবারে পরিণত হয়। রংপুর বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা স্মৃতি সিংহ রায় জানান, মানুষের প্রয়োজনে গুইসাপকে হত্যা করা হচ্ছে। ফলে সোনালি প্রজাতির গুইসাপের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। কালো প্রজাতিটি মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনো রকমে টিকে আছে। এদের রক্ষা করা না গেলে পরিবেশের ক্ষতি হবে। এই প্রাণীটির অস্তিত্ব রক্ষায় জনগণকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর