মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট হলো । আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো উচিত ছিল

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো উচিত ছিল

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)-এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী কর বছরের জন্য ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো উচিত ছিল। আমরা মনে করি, এটি ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে অন্তত ৪ লাখ টাকা করা উচিত। আগামী অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেট নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিসিআই প্রেসিডেন্ট। বিজিএমইএর এই সাবেক সভাপতি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর ২.৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক; তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা কোম্পানিগুলোর জন্য বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য হবে।

তৈরি পোশাকশিল্পের এই উদ্যোক্তা আরও বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি করোনা মহামারি ও ইউক্রেন সংকটে বিপর্যস্ত। এ কঠিন সময়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঘোষিত বাজেট আশাব্যঞ্জক।   

তবে সুশাসন, যথাযথ মনিটরিং, দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও যথাযথ পরিকল্পনা নিশ্চিত করা না গেলে এ বাজেট বাস্তবায়নে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে সরকারকে।

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের জন্য সব ধরনের রপ্তানিমুখী কোম্পানির করহার ১২ শতাংশ করা হয়েছে, যা ইতিবাচক। তবে রপ্তানিতে উৎসে কর দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাবটি বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে রপ্তানির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করনে তিনি। এজন্য এটি কমিয়ে আগের হারে নির্ধারণের প্রস্তাব করেন বিসিআই প্রেসিডেন্ট।

বাংলাদেশি পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের আয় ২০৩০ সাল পর্যন্ত করমুক্ত কারায় এ সিদ্ধান্তটিও ভালো বলে জানান এই শিল্পোদ্যোক্তা। তিনি বলেন, বর্তমান সংকটময় বিশ্ব অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে প্রণোদনা প্রদানে বিষয়টি সরকারের ভালো সিদ্ধান্ত। প্রয়োজনে ডলারের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করে প্রবাসী আয়কে আরও উৎসাহিত করা জরুরি।

বিসিআই সভাপতি বলেন, ঘোষিত বাজেটে শিল্পে কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ এবং পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। উৎসে কর সমন্বয় করা হয়, এ কারণে এটি প্রত্যাহার করা উচিত। এ ছাড়া এ ধরনের কর ব্যবসায় ব্যয় বৃদ্ধি করে। উৎসে করের পাশাপাশি অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও অগ্রিম কর (এটি) প্রথাও বিলুপ্তির দাবি জানান এই শিল্পোদ্যোক্তা। স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের টার্নওভার করহার শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করার প্রস্তাবটি ভালো বলেও জানান বিসিআই সভাপতি। এ ছাড়া স্টিলপণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত এইচ আর কয়েল ও জিঙ্ক অ্যালয় জাতীয় কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে করহার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্তটিও ইতিবাচক বলে মনে করেন তিনি। তবে তরুণ শিল্পোদ্যোক্তার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিল্পায়নের প্রসারে কাঁচামাল আমদানিতে মূসক অব্যাহতি দেওয়া উচিত বলে জানান বিসিআই প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া তরুণ উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের জন্য বাজেটে বিশেষ তহবিল গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর