মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে স্ত্রীকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকিতে লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে ভাড়া বাসায় নিজের দ্বিতীয় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন স্বামী শওকত আলী। এরপর লাশ সেফটিক ট্যাংকিতে ফেলে দেন। লাশ গুমের দুই বছর পর নগরের পাঁচলাইশ থানার নাসিরাবাদ হাউসিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোডের অফিসে সেফটিক ট্যাংকিতে পাওয়া যায়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এ হত্যারহস্য উদঘাটন করে। হত্যায় জড়িত স্বামী শওকত আলীকে (৬৫) নগরের খুলশী থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান ডিবি (উত্তর) বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. জহিরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মো. কামরুল হাসান। নিহত নারীর নাম লিপি আক্তার, তিনি শওকত আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী। লিপি আক্তার বরিশাল জেলার বাসিন্দা। গ্রেফতার শওকত আলী এমজিএইচ গ্রুপের নাসিরাবাদ শাখার ক্লিনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ডিবি (উত্তর) বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শওকত ও লিপি আক্তারের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের তিন-চার বছর পর পুনরায় তারা একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। পারিবারিক কলহের জেরে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর শওকত দ্বিতীয় স্ত্রী লিপি আক্তারকে শ্বাসরোধ করে ভাড়া বাসায় হত্যা করেন। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে অটোরিকশাযোগে নাসিরাবাদ হাউসিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোডের ৬ নম্বর বাসার অফিসে এনে সেফটিক ট্যাংকিতে ফেলে দেন।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডটির কোনো প্রকার ক্লু না থাকায় অধিক গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়। লাশটি বিকৃত, গলিত এবং দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাছাড়া আশপাশের সিসিটিভিতে দীর্ঘদিনের ফুটেজ সংরক্ষিত না থাকায় অপরাধীকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছিল না। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা এমজিএইচ গ্রুপের অফিসের সব স্তরের স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তের অংশ হিসেবে সব স্টাফের ব্যক্তিগত-পারিবারিক তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করা হয়। বেশির ভাগ স্টাফকে নজরদারিতে রাখা হয়। এর মধ্যে কিছু স্টাফের মোবাইলের কললিস্ট নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। একপর্যায়ে শওকতের প্রাপ্ত তথ্য এবং সিডিআরে প্রাপ্ত তথ্য গরমিল পরিলক্ষিত হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্বীকার করেন। প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল নগরের পাঁচলাইশ থানার নাসিরাবাদ হাউসিং সোসাইটির একটি বাসার সেফটিক ট্যাংকি পরিষ্কারের সময় ট্যাংকির ভিতরে অজ্ঞাত মহিলার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৯ মে মামলাটি তদন্তের ভার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

সর্বশেষ খবর