বুধবার, ১৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

সুনামগঞ্জে পানির নিচে সড়ক, ভোগান্তি

সিরাজগঞ্জে বন্যার সঙ্গে বাড়ছে ভাঙন

সুনামগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জে পানির নিচে সড়ক, ভোগান্তি

পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের দুর্গাপুর এলাকা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে সড়ক। এতে চরম জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অরক্ষিত অঞ্চলে তীব্র ভাঙনও শুরু হয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল।

সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে জেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি এলাকায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। চলাচলের জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ  হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ।

তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের দুর্গাপুর, শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ারপুর অংশ গত দুই দিন ধরে পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।

খেয়া নৌকায় নিমজ্জিত অংশ পার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ হাঁটু সমান পানি ভেঙে ঝুঁকি নিয়ে চালাচ্ছেন যানবাহন। দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা সমসের বলেন, ঢল আসলেই এই সড়কের তিনটি অংশ তলিয়ে যায়। আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়ি। এর বিকল্প হিসেবে সেতু নির্মাণ করে এই সমস্যা সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।  ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর সদর, দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী অন্তত ১০টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। গতকাল জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে চলে এলেও ছাতকে রয়েছে বিপৎসীমার ওপরে। বৃষ্টিপাত বন্ধ হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে সিরাজগঞ্জে গত এক সপ্তাহ ধরে যমুনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ করতোয়া, ফুলজোড়, হুড়াসাগর, বড়াল ও ইছামতি নদীতেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। চৌহালী ও এনায়েতপুরে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। সোমবার দুপুরে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রামে একটি নান্দনিক তারকা মসজিদসহ প্রায় ১০টি বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। চৌহালীতে বিলীন হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। বসতভিটা হারানো মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফসলি জমি হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। পানি বাড়তে থাকায় যমুনার চরাঞ্চলে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাট, তিল, কাউন, ধান, শাক-সবজির বাগান তলিয়ে যাচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের প্রভাবে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে নদী-তীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। অরক্ষিত অঞ্চলগুলোতে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত : গত দুই সপ্তাহের অবিরাম বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সেসব এলাকার বসতবাড়ির চারদিকে পানি ওঠায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অনেক পরিবারে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।  কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত পাঁচ দিন ধরে রৌমারী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নদী জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানির পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন রৌমারী উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, রৌমারী উপজেলায় প্রায় ২২৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর