শিরোনাম
শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজধানীতে তলিয়ে গেছে বহু এলাকা

দিনভর বৃষ্টিতে দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে তলিয়ে গেছে বহু এলাকা

টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জে। ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানি ডিঙিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। গতকালের তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আষাঢ়ের তৃতীয় দিন দিনভর বৃষ্টি দেখল ঢাকাবাসী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গতকাল রিমঝিম, হালকা, মাঝারি এবং ভারী বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। মেঘের গর্জন, অনেকটা সময় কালো মেঘ আচ্ছন্ন করে ফেলে পুরো শহর। ভরদুপুরে ও বিকালে ঢাকাবাসীকে রাতের স্বাদ নিতে হয়েছে। এ সময় বাইরে চলাচলকারী গাড়িগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে। ছুটির দিনেও বৃষ্টির ফলে ঢাকায় অনেক সড়কে সৃষ্টি হয় জলজট। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে কর্মব্যস্ত মানুষকে।  

সরেজমিন দেখা গেছে, বিকাল ৪টার পর থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সড়কগুলোয় পানি জমে যায়। মুষলধারার বৃষ্টির পানি জলজটের সৃষ্টি করে। কোনো কোনো সড়কে হাঁটুপানিও জমে থাকতে দেখা যায়। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা, কুড়িল এলাকার অনেক সড়কেও জলজটের সৃষ্টি হয়। তবে ঢাকার দুই সিটির সম্প্রসারিত এলাকাগুলোয় জলজটের মাত্রা বেশি ছিল। বিশেষ করে দক্ষিণখান, উত্তরখান, তুরাগ, ডেমরা এলাকার বিভিন্ন সড়কে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এসব এলাকার সড়কের কোথাও কোথাও হাঁটুপানিও জমে থাকতে দেখা গেছে। ওইসব এলাকার ভুক্তভোগীদের অনেকে জলজটের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে দুঃখ প্রকাশ করেন। দক্ষিণখানের বাসিন্দা ইয়াছিন রানা ফেসবুকে লিখেছেন, দক্ষিণখান এলাকা সিটি করপোরেশনভুক্ত হয়ে কি লাভ হলো...। এর নিচে তিনি তাদের বাসার গলি দিয়ে হাঁটুসমান পানির ঢেউ দেখালেন। পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের জমিদার গলিতেও গতকালের বৃষ্টিতে হাঁটপানি জমে থাকে। ড্রেনে আবর্জনা ফেলার কারণে সড়কে নোংরা পানি একাকার হয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে বাইরে বের হওয়া মানুষ ওই আবর্জনাযুক্ত পানি ডিঙ্গিয়ে চলাচল করেছেন। পুরান ঢাকার বাসিন্দা মুসতাক আহমদ বলেন, গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিতে নাজিম উদ্দিন রোডের জমিদার গলিতে হাঁটুপানি জমে যায়। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয়। তখন দুর্গন্ধযুক্ত হাঁটুপানি মাড়িয়ে আসতে হয়েছে। এ শহরের এ উন্নতির কথা শুনছি, তাহলে অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না কেন?

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, সকালে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে সিটি করপোরেশনের ‘কুইক রেসপন্স টিম’-এর সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। অর্থাৎ, জলজট ও জলাবদ্ধপ্রবণ এলাকার পানি সরাতে পাঁচ থেকে ছয়জন শ্রমিক কাজ করেছেন। আর এসব কার্যক্রম সরাসরি তদারক করেছেন সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা। ঢাকার দুই সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে জলজট নিরসনে সিটি করপোরেশনের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এরপরও সৃষ্ট জলজটে নাকাল হয়েছে নগরবাসী।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ডিএসসিসিতে বেশ কিছু জলজট ও জলাবদ্ধপ্রবণ এলাকা রয়েছে। সেগুলোতে গতকাল জলজট হয়েছে। এর সংখ্যা ছয় থেকে সাতটি হবে। সেসব এলাকার পানি নিষ্কাশনে কাজ করেছেন ‘কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা’।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, গতকাল অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলজটের সৃষ্টি হয়। সেসব নিরসন করতে ডিএনসিসির কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পানি সরে যাবে। নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবে ডিএনসিসি নিরলস কাজ করছে। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর