শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
কৃষি

পাহাড়ে চাষ হচ্ছে ড্রাগন

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

পাহাড়ে চাষ হচ্ছে ড্রাগন

পাহাড়ে এখন ব্যাপক হারে চাষাবাদ হচ্ছে বিদেশি ফল ড্রাগন। বহুমুখী পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ক্যাকটাস জাতীয় সুস্বাদু ও উচ্চ ফলনশীল বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন পাহাড়ি জনপদের কৃষকরা। তাদের সফলতায় পাহাড়ে ড্রাগন চাষে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন নতুন নতুন উদ্যোক্তা। এ বছর সদর খাগড়াছড়ি উপজেলায় প্রায় ১৬ হেক্টও ও মানিকছড়িতে ৭ হেক্টর পাহাড়ি ভূমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে। একইভাবে জেলার ছয়টি উপজেলায় পাহাড়ি-টিলায় ড্রাগনের চাষ করা হচ্ছে। উঁচু-নিচু টিলায় শোভা পাচ্ছে সবুজ ডগায় লাল, সবুজ, কালো, গোলাপী ও হলুদ রঙের বিভিন্ন জাতের ড্রাগন। প্রতি কেজি ড্রাগন ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। খাগড়াছাড়ি সদর উপজেলা কৃষি র্কমর্কতা মুক্তা চাকমা জানান, গাছবান, নুনছড়ি, ভাইবোনছড়াসহ বিভিন্ন্ এলাকায় প্রায় ১৬ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ করা হয়েছে।  বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ায় কৃষকরা এ চাষে এখন ঝুঁকে পড়েছে। প্রায় বাগানী উৎপাদিত ড্রাগন ফল জেলার বাইরে নিয়ে বিক্রি করছেন।

অঙ্গজ উপায়ে বংশবিস্তার করা ড্রাগন চারা রোপণের এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। ভালো পরিচর্যা পেলে টানা ৩০ থেকে ৩৫ বছর ফল দিতে থাকে প্রতিটি গাছ।

বছরে কমপক্ষে পাঁচ/ছয়বার ফলন আসে গাছে। তিন-পাঁচ বছর বয়সী প্রতি গাছ বছরে কমপক্ষে ৯-১৫টি ফল ধরবে এবং ফলের ওজন হবে ৩.২০ গ্রাম। এভাবে বছরে হেক্টরপ্রতি ফল আসবে কমপক্ষে ২০/২৫ মেট্রিক টন। ড্রাগন সাধারণত এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ ফুল আসে। আর ফুল রাতের বেলা ফোটে। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিন পর ফল পাকতে শুরু করে। সে অনুযায়ী জুন মাসের শুরুতে বাজারে পাকা ড্রাগন ফল বেচা-বিক্রি শুরু হয়।

মানিকছড়ি উপজেলার বড়বিল, চেঙ্গুছড়া, পূর্ব তিনটহরী, কুমারী, বড়ইতলী ও গাড়িটানা এলাকায় গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ড্রাগন বাগান। এ ছাড়াও বাসাবাড়ির ছাদ ও আঙিনায় ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম উপজেলার গাড়িটানায় ২০১৪ সালে গড়ে ওঠা এম জে এগ্রো ফার্ম ও ২০১৯ সালে বড়বিল এলাকায় গড়ে ওঠা গ্রিন এগ্রো ফার্ম নেটওয়ার্ক নামে দুটি যৌথ প্রকল্পের ড্রাগন বাগান। দুটি বাগানে দুই হাজার পিলারে আট হাজার ড্রাগন চারা রোপণ করা হয়। বর্তমানে দুই হাজার পিলারেই ঝুলে আছে ফুল-ফলে সুশোভিত ড্রাগন। এ বছর আট হাজার গাছ থেকে কমপক্ষে ৩০ মেট্রিক টন ফল উত্তোলন সম্ভব হবে।

মানিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান জানান, এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য বেশ উপযোগী। বর্তমানে উপজেলার ৭ হেক্টর ভূমিতে ড্রাগনের চাষ হয়েছে। আমরা বাগানগুলো পরিদর্শন করে চাষিদের উপযুক্ত পরামর্শ প্রদান করছি। রোগবালাই ও কম পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকায় প্রতিনিয়ত পাহাড়ে ড্রাগন চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর