রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

নতুন বাজেটে আশা জাগছে পুঁজিবাজারে

বিএসইসি নিচ্ছে নানা পদক্ষেপ

আলী রিয়াজ

নতুন বাজেটে আশা জাগছে পুঁজিবাজারে

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে পুঁজিবাজার। বাজেট পাসের পর পুঁজিবাজারে কিছুটা দরপতন হলেও শেষ দুই দিনের লেনদেনে শেয়ারদর বেড়েছে। দুই দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক প্রায় ৭০ পয়েন্ট বেড়েছে। বাজার শক্তিশালী করতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আলোচনা হচ্ছে টি-১ সিস্টেম চালু করবে সংস্থাটি। এ ছাড়া গঠন করা হয়েছে মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ড। নতুন এসব পদক্ষেপে আশা জাগছে বিনিয়োগকারীদের। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে প্রণোদনা দিতে একাধিক সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানির করপোরেট কর কমানো হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলেও সরকারের শীর্ষ মহল থেকে বিষয়টি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর আরও কমানো হতে পারে। বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুযোগ থাকতে পারে চূড়ান্ত বাজেট পাসের সময়। ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড করমুক্ত ঘোষণা আসতে পারে। কমানো হতে পারে মার্চেন্ট ব্যাংকের ওপর আরোপিত কর। এসব ছাড়াও বাজার শক্তিশালী করতে বিএসইসি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে গঠন হয়েছে মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড, যে ফান্ডের টাকা ব্যবহার করা হবে পুঁজিবাজারে। ইতোমধ্যে বাজারে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। কমিশনের চেয়ারম্যান ড. শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের উদ্যোগে সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেন করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এ লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন। দেশের পুঁজিবাজারে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বন্ড মার্কেটের টাকা ব্যবহার করা হবে। এ ধরনের উদ্যোগের পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী ও স্থিতিশীল হয়ে উঠবে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। সরকারি সিকিউরিটিজের অভিহিত মূল্য হবে ১০০ টাকা এবং মার্কেট লট হবে ১ হাজার। অর্থাৎ ন্যূনতম ১ লাখ টাকা অভিহিত মূল্যের সিকিউরিটিজ লেনদেন করা যাবে। বিনিয়োগকারীরা প্রাইস উল্লেখ করে সিকিউরিটিজ কেনাবেচা করতে পারবেন। বিক্রেতা বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে অ্যাকুয়ার্ড ইন্টারেস্ট পাবেন এবং  ক্রেতা বা বন্ডহোল্ডার কুপন  ডেটে কুপনের অর্থ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিইএফটিএনের মাধ্যমে জমা পাবেন। এতে ক্রেতা-বিক্রেতার কারও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পোর্টফোলিওতে ঝুঁকিবিহীন সরকারি সিকিউরিটিজ অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। ফলে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমে আসবে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট তৈরি হবে। এসব খবরে নতুন করে আশা জাগছে বিনিয়োগকারীদের। গত মাসে টানা চার সপ্তাহে দরপতনে ডিএসই সূচক কমেছিল ৪২৩ পয়েন্ট। বাজেট ঘোষণার পর আগের সপ্তাহে সূচক বেড়েছে। বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, ‘পুঁজিবাজারে সবাইকে ভেবেচিন্তে বিনিয়োগ করতে হবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনেকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি থেমে নেই। পুঁজিবাজারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। অবশ্যই একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার আমরা উপহার দেব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর