বুধবার, ২২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ভারতে বসবাস করেও নয় বছর বেতন নেন হাতিয়ার শিক্ষক!

নোয়াখালী প্রতিনিধি

দীর্ঘ নয় বছর ধরে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেও নোয়াখালীর হাতিয়ার চরঈশ্বর রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদারের বেতন উত্তোলনের অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গতকাল হাতিয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসান সরেজমিনে তদন্তে যান।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হাতিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে গত ৯ বছর ধরে সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন চরঈশ্বর রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদার। এত বড় অনিয়ম নিয়ে এলাকাবাসী ফুঁসে ওঠায় গত বছরের ডিসেম্বর থেকে তার বেতন বন্ধ হয়ে যায়। রিঙ্কু মজুমদার উপজেলার উত্তর চরঈশ্বর দাসপাড়া এলাকার সাবেক সহকারী শিক্ষক বারেন্দ্র দাসের স্ত্রী। রিঙ্কু স্বামী-সন্তান নিয়ে গত ৯ বছর ধরে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। অথচ মাস শেষে তার স্বজনরা অগ্রিম সই করে রাখা চেক দিয়ে বেতন উত্তোলন করতেন। এমনকি এ সময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন মর্মে মাসিক প্রতিবেদনও নিয়মিত জমা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রিঙ্কু মজুমদার জানান, গত ডিসেম্বরে তিনি এক মাসের মেডিকেল ছুটি নিয়েছেন এবং চলতি মাসে স্কুলে যোগ দিয়েছেন। তিনি কখনো ভারত যাননি বলে দাবি করেন। স্থানীয় একাধিক সূত্র এবং বিদ্যালয়ের অভিভাবক চয়ন দাস, শোভা রানী, মল্লিকা দাস, নিশান বাবু, পাপন দাস ও অসীম দাসসহ অনেকে জানান, গত ৮/৯ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদার প্রায় সময়ই ভারতে থাকেন। কয়েক মাসের বেতন ব্যাংকে জমা হলে তিনি দেশে আসেন। মাঝে মধ্যে তার আত্মীয়রা চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়েছেন। তার এ অনিয়মের ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে জানালেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা। কারণ তৎকালীন শিক্ষা অফিসার ভবরঞ্জন বাবু রিঙ্কু মজুমদারের আত্মীয়। তার ছত্রছায়ায় প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদার এই দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন। অবশ্য, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক এই শিক্ষা অফিসার ভবরঞ্জন বাবুও।

এই অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে ওই ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান জানান, প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত চলছে। তিনি জানান, গত ডিসেম্বরে এক মাসের মেডিকেল ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে না ফেরায় আমি প্রতিবেদন দিয়েছি। বর্তমানে তার বেতন বন্ধ রয়েছে। এই বিষয়ে আরও তদন্ত করা হবে। নোয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিস অনিয়মকে ধামাচাপা দিয়ে রাখছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

 

সর্বশেষ খবর