শনিবার, ২৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ফিরোজায় ফিরলেন খালেদা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফিরোজায় ফিরলেন খালেদা

রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল ছাড়পত্র পাওয়ার পর হাসপাতালের নানা প্রক্রিয়া শেষ করে বিকাল সোয়া ৬টার দিকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ পৌঁছান। এর আগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার জানান, হার্টের যে ঝুঁকি নিয়ে খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তা এখন স্থিতিশীল রয়েছে। তবে তিনি এখনো সুস্থ হননি। দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার আরও বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এখনো অসুস্থ। তিনি যে অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিলেন সেটি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য উপসর্গ যেমন লিভার সিরোসিসের রক্তক্ষরণ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। কিডনি সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। হার্টের দুটি ব্লক এখনো রয়েছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণের ঝুঁকি খুবই উচ্চ। বাসায় থাকলেও তাঁকে পুরো মনিটরিংয়ে রাখতে হবে। তাঁর খাদ্যনালির যে সমস্যা ছিল, সেটি এখন কী অবস্থায় আছে তা দেখা সম্ভব হয়নি। কারণ সে ধরনের পরীক্ষা করার মতো শারীরিক অবস্থা এ মুহূর্তে তাঁর নেই।

খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের আরেক চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ এফ এম সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়ার ফুসফুসে পানি চলে এসেছিল। পরে বিশেষ ইনজেকশন দিয়ে সেই পানি সরানো হয়। এখন তাঁর হার্টে পানি নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ এফ এম সিদ্দিকী বলেন, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নেওয়ার সুযোগ এখনো মোটামুটিভাবে আছে। এখন পর্যন্ত বিমানে ভ্রমণ করার শারীরিক সক্ষমতা আছে। সব জটিলতার চিকিৎসা করাতে হলে বা সুস্থ করতে হলে যা করার দরকার তা দেশে পুরোপুরি করতে পারছি না। সেই সক্ষমতা, মেডিকেল সেটআপ আমাদের দেশে নেই। তাঁর সুষ্ঠু চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এ জন্য তাঁর সুষ্ঠু চিকিৎসায় দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার অনেক জটিল অসুস্থতা আছে। তাঁর রেনাল ফিলিউর, ব্লিডিংয়ের চান্স ও সিরোসিস অব লিভার এখনো রয়ে গেছে। সেটার কোনো চিকিৎসা হয় না। আমরা শুধু তাঁর ব্লিডিং স্পটগুলোকে লাইগেশনের মাধ্যমে বন্ধ করে রেখেছি। সেগুলো কী অবস্থায় গত ছয় মাসে আমরা ফলোআপ করতে পারিনি। এখনো তাঁর হৃদরোগের কারণে এন্ডোস্কোপি করা সম্ভব হয়নি।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) তাঁর চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁর জন্য দোয়া করার জন্য দেশবাসীকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. শেখ ফরিদ আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. আল মামুন এবং হাসপাতালের মেডিকেল প্রমোশন বিভাগের প্রধান বিনয় কাউল প্রমুখ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১০ জুন গভীর রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তাঁর হার্টে একটি রিং বসানো হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর