সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

অর্থনীতি পাল্টে দেবে পায়রা-মোংলা বন্দর

-এ কে আজাদ

অর্থনীতি পাল্টে দেবে পায়রা-মোংলা বন্দর

পদ্মা সেতু চালুর ফলে সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা, পায়রা ও মোংলা বন্দর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক চেহারা পাল্টে দেবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। ফরিদপুর থেকে উঠে আসা এই শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, ‘সেতু চালুর মধ্য দিয়ে আমাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এখন আমরা নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্পায়নের দিকে এগোব। এ জন্য সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত কৃষিভিত্তিক শিল্প খাত। এ ক্ষেত্রে সরকারকে ১০ বছর মেয়াদি বিশেষ কর সুবিধা দিতে হবে বলে মনে করেন হা-মীম গ্রুপের এই কর্ণধার। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। এই স্বপ্নপূরণের মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে। ইতোমধ্যে আমরা শিল্প-কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। কৃষিভিত্তিক শিল্পে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’ তিনি মনে করেন, পাটশিল্প মূল্য সংযোজন করে রপ্তানি হতে পারে। কৃষি ও মৎস্য শিল্পে উৎপাদন বাড়বে। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও চামড়াশিল্পের কারখানা স্থাপনের চিন্তা করেছি। আগামীতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎনির্ভর শিল্প গড়ে উঠবে। ৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। এতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। অন্যান্য শিল্প খাতেও রপ্তানি বাড়বে। আর অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে পায়রা ও মোংলা বন্দর কার্যকর করা সম্ভব হবে। বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হলে পদ্মা সেতু দিয়ে গ্যাস দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আনতে হবে। প্রয়োজনে বেসরকারি খাতে এলএনজি আমদানি উন্মুক্ত করতে হবে। গ্যাস পেলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী শিল্প হবে।’ বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক এই সভাপতি বলেন, পদ্মা সেতুর দুই পাশে বিশাল এলাকা ঘিরে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠছে শিল্প। অনেক শিল্পপতি শিল্প-কারখানা স্থাপনের জন্য জমি কিনেছেন। গড়ে উঠছে অনেক স্থাপনা। পদ্মা সেতুর সুফল কাজে লাগিয়ে পুরোদমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হলে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়বে। বাড়বে কর্মসংস্থান। কমবে আয়বৈষম্য। মোংলা বন্দরে আসবে গতিশীলতা। পায়রা বন্দর সচল হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে পদ্মা সেতু হবে মাইলফলক। গ্রামীণ অর্থনীতির উৎপাদনশীলতা হবে রপ্তানিমুখী। দারিদ্র্য নিরসন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে পদ্মা সেতু।’ এ কে আজাদ বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণ বাংলায় কোনো শিল্প-কারখানা নেই। ষাটের দশকে কিছু পাটকল হয়েছিল। এর বাইরে দু-একজন শিল্প-কারখানা করার চেষ্টা করেও সফল হননি। এখন পদ্মা সেতু হওয়ার পর যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এর সঙ্গে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে গ্যাসের লাইন পাওয়া গেলে যথেষ্ট বিনিয়োগ আসবে। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর দুই তীর ঘিরে কয়েকটি অর্থনৈতিক জোনের পরিকল্পনা করেছেন। এগুলো করতে পারলে আগামী ১০ বছরে পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হওয়া অর্থ উঠে আসবে।’

 

সর্বশেষ খবর