সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ভালো কিছুর প্রত্যাশা আগামী বছর

ডব্লিউটিওর পরবর্তী সম্মেলনের আগাম প্রস্তুতি শুরু

মানিক মুনতাসির

সদ্য শেষ হওয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ১২তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের অর্জন ও পর্যালোচনা বিষয়ে গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সভাপতিত্ব করেন। এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় ডব্লিউটিও-এর ১৩তম সম্মেলনের আগাম প্রস্তুতি শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১২তম সম্মেলন শেষ হয় এক ধরনের অমীমাংসিতভাবেই। এতে বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্জন এক রকম শূন্য। আমেরিকা, ইইউভুক্ত উন্নত দেশগুলোর চাপে পড়ে ডব্লিউটিও অসহায়ত্বের পরিচয় দিয়ে আসছে বছরের পর বছর। গত ১২-১৬ জুন জেনেভা সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রধান যে চারটি দাবি ছিল তার কোনোটিই পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। তবে আলোচনার পথ খোলা রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো তাদের ইস্যুগুলো নিয়ে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারবে। এতে সমন্বয়কের ভূমিকায় থাকবে ডব্লিউটিও। এটাকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এবারের বৈঠকে নানা ধরনের নাটকীয়তা আর উন্নত দেশগুলোর প্রতি ডব্লিউটিও এর আনুগত্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার কারণে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন?্য ফল বিপর্যয় এনেছে। এ ছাড়া এলডিসি উত্তরণ পর্যায়ে থাকা দেশগুলো বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারেনি। তবে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ গতকাল বৈঠকে বলেছেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এমসি ১৩ সম্মেলনে ভালো কিছু ফল পাওয়া যাবে। আমরা সে প্রত্যাশায় আছি।

এবারের সম্মেলনে জেনেভা প্যাকেজ ঘোষণার কথা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। সেখানে উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা ২০২৬ সালে এলডিসি থেলো উত্তরণ করবে এবং যেসব দেশ ইতোমধ্যে উত্তরণ করেছে তাদের টেকসই উন্নয়ন ধরে রাখার ব্যাপারে সহায়তা দেবে। এ ক্ষেত্রে ডব্লিউটিও নেগোসিয়েশন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। যদিও ডব্লিউটিওর ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। অবশ্য এখানে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে। আগামী সম্মেলনের আগেই এসব ইস্যুতে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে বাংলাদেশ বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারভুক্ত হতে যাচ্ছে। এরপর আরও অন্তত ছয় বছর নানা ধরনের বাণিজ্য সুবিধা বহাল রাখার দাবি জানিয়েছিল বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরোনোর অপেক্ষায় থাকা দেশগুলোও। এ ক্ষেত্রে এসব দেশের টেকসই উত্তরণ ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবারের সম্মেলনে। আসছে সম্মেলনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতিস্বরূপ কিছু হোমওয়ার্ক করতে হবে এসব দেশকে। যার প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ শুরু করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল।

সর্বশেষ খবর