বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

মেয়াদ শেষেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই

ডিএসসিসির মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন

হাসান ইমন

ওয়ার্ড ভিত্তিক পরিবহন, ঐতিহাসিক স্থাপনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বর্জ্য, ড্রেনেজ, পার্ক ও মাঠসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণে ৩০ বছর মেয়াদি সমনি¦ত মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এই পরিকল্পনার পথ নকশা তৈরিতে এক বছরের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছিল সংস্থাটি। ইতোমধ্যে বছর শেষ হলেও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে তেমন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু এটা মাস্টারপ্ল্যান, সেজন্য একটু দেরি হচ্ছে। কারণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে কোথায় কী হবে ঘুরে ঘুরে নির্দিষ্ট স্থান বের করতে হয়, সে জন্য সময় লাগছে। জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নির্বাচনী ইশতেহারে বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকা মহানগর সমন্বিত মহাপরিকল্পনা (২০২০-২০৫০) স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৬ অনুসারে ডিএসসিসি এই মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়। তারই পরিপ্র্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ জুন এক বছরের জন্য দুটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্ট লি. ও সততা আর্কিটেক্ট ফর গ্রিন লিভিং) নিয়োগ দেয় ডিএসসিসি। ওই মাসের ২৮ তারিখে আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়। গতকাল এক বছর শেষ হয়। কিন্তু এই মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে তেমন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি। এই পরিকল্পনায় অনেক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে, ফাইনাল ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি রিপোর্ট, ব্লক ভিত্তিক উন্নয়নে খসড়া ও চূড়ান্ত ডিজাইন, জন অংশগ্রহণমূলক দ্রুত মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা, ওয়ার্ড ভিত্তিক অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত, ওয়ার্ড ভিত্তিক অ্যাকশন প্ল্যানে ডিজাইন চূড়ান্ত করা। এ ছাড়া খসড়া ফিজিবিলিটি রিপোর্ট তৈরির কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। আর ওয়ার্ড ভিত্তিক ডাটাবেজ তৈরি কার্যক্রমের কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। জন অংশগ্রহণপূর্বক দ্রুত মূল্যায়ন (পিআরএ) ও ইনসেপশন রিপোর্টের কাজ শেষ হয়েছে।

এ ছাড়াও অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পসমূহের মধ্যে কামরাঙ্গীরচরে একটি অত্যাধুনিক কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল গড়ে তোলার নিমিত্ত দিকনির্দেশনা সংবলিত রিপোর্ট প্রস্তুত হয়েছে, যার আলোকে প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার (৫০ তলা), ২টি সংযোগকারী সেতু, ছয় লেন বিশিষ্ট সড়ক ইত্যাদি বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ফকিরখালিতে একটি পরিবেশবান্ধব আবাসন গড়ে তোলা, প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রয়োজন অনুপাতে নাগরিক সুবিধাদি সংক্রান্ত স্থাপনার সম্ভাব্য অবস্থান নিরূপণ ইত্যাদি কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।

আরও জানা যায়, রাজধানীতে বিদ্যমান সব পরিকল্পনা, তথা- রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খসড়া বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (২০১৬-২০৩৫), ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান, ডিটিসিএ’র রিভাইজড স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানের (আরএসটিপি) (২০১৫-২০৩৫), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ক্লিন ঢাকা মাস্টার প্ল্যান (২০১৮-২০৩২), কন্টিনজেন্সি ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ফর ঢাকাসহ সব পরিকল্পনার সঙ্গে ডিএসসিসির এই মহাপরিকল্পনা সমন্বয় করা হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ডিএসসিসি ৩০ বছর মেয়াদি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা তৈরি করছে। ইতোমধ্যে কিছু অংশের কাজ শেষ হয়েছে। আর বাকি অংশের কাজ চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে এই মহাপরিকল্পনার ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, এক বছর মেয়াদি এই কার্যক্রমের মেয়াদ শেষ হলেও নতুন আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। আশা করি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারব।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই মাস্টার প্ল্যানে জমির যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা, সড়ক ব্যবস্থাপনা মহাপরিকল্পনা, নর্দমা অন্তর্জাল মহাপরিকল্পনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মহাপরিকল্পনা এবং সামাজিক সুবিধাদিসহ নগরবাসীর সামগ্রিক প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর