সুনামগঞ্জ, লালমনিরহাট, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। খাদ্য সহায়তা পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে বন্যাকবলিত এসব জেলার মানুষের। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
সুনামগঞ্জ : হাওর অধ্যুষিত দুর্গম উপজেলার ধর্মপাশার বন্যাদুর্গতদের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল দিনভর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেনা সদস্যরা বন্যার্তদের এ সহায়তা বিতরণ করেন।
সুনামগঞ্জ আর্মি ক্যাম্পের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মেজর আশিক ইকবাল জানান, গতকাল ধর্মপাশার বিভিন্ন এলাকায় ১ হাজার বন্যাদুর্গত পরিবারের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আরও ১ হাজার ও সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে ৫০০ পরিবারের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন সেনা সদস্যরা।বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের নির্দেশনায় সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গতের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৪০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছে দেশের শীর্ষ এই শিল্প গ্রুপ। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত দুর্গত মানুষের মধ্যে এ খাদ্য সহায়তা বিতরণ অব্যাহত আছে।
লালমনিরহাট : লালমনিরহাটে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তায় হাসি ফুটেছে দীর্ঘদিন ধরে বন্যাকবলিত হয়ে থাকা তিস্তাপাড়ের অসহায় মানুষের মুখে। ত্রাণ হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত আছিয়া বেওয়া বললেন, ‘কয়েক দিন ধরে সারা দিনে একবার খেয়ে দিন পার করছি। বসুন্ধরার এ ত্রাণে অন্তত চার-পাঁচ দিন পেট ভরে খাবার খেতে পারব।’ ত্রাণ নিতে আসা বৃদ্ধ মোশারফ বলেন, ‘যতবার বিপদে পড়েছি, ততবারই বসুন্ধরা গ্রুপকে কাছে পেয়েছি। বানের পানিতে এখনো পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে আমাদের। এমন দুঃসময়ে বসুন্ধরার ত্রাণ আমাদের ঘরে ঈদের খুশি এনে দিল।’
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তাবেষ্টিত খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের চোংগাধারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাকার মাথা এলাকায় সাড়ে ৩ শতাধিক পরিবারের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান এবং পরিচালক ইয়াশা সোবহানের উদ্যোগে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য এ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বসুন্ধরা পেপার মিলস্ লিমিটেড।
বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা নিতে আসা খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তার চরের বাসিন্দা মোশারফ, মফিজুল, আরজেনা, মহসিন জানালেন, ‘লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে শরম করে। কিন্তু উপায় নাই বন্যার কারণে অভাবে পড়ছি। হামার মতো মানুষোক বসুন্ধরা গ্রুপ খুঁজি খুঁজি সাহায্য দেওয়ায় কয়েকদিনের খাবারের সংস্থান হলো।’
সদর উপজেলার প্রত্যন্ত খুনিয়াগাছ ইউনিয়নে বানভাসি মানুষের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন বসুন্ধরা পেপার মিলস্ লিমিটেডের ম্যানেজার (নর্থবেঙ্গল) খায়রুল ইসলাম, এক্সিকিউটিভ আজিজুর রহমান, ডিস্ট্রিবিউটর আমিনুল ইসলাম বাবু, খুনিয়াগাছ ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাদলসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়- চাল, ডাল, বিস্কুট, চিড়া, গুড়, লবণ, সাবান, খাবার স্যালাইন ইত্যাদি।
নেত্রকোনা : মদন ও কেন্দুয়ায় ত্রাণ দিল বসুন্ধরা গ্রুপের টিস্যু সেক্টর। বানভাসিদের খবরে বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান ও পরিচালক ইয়াশা সোবহানের পক্ষ থেকে নেত্রকোনার বানভাসিদের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় শুকনা খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হয়েছে।
টিস্যু সেক্টরের খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক মো. মান্নান রবিবার দিনব্যাপী ৭৫০ প্যাকেট খাদ্য বিতরণ করেছেন।
কুড়িগ্রাম : দেশের সর্ববৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলে বন্যাকবলিত যাত্রাপুর এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে সাড়ে ৩ শতাধিক পরিবারের মধ্যে এ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে যাত্রাপুর এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা পেপার মিলস্ লিমিটেডের সৌজন্যে এ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান ও পরিচালক ইয়াশা সোবহানের উদ্যোগে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য এ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। বানভাসিদের হাতে এসব খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন বসুন্ধরা পেপার মিলস্ লিমিটেডের ম্যানেজার (নর্থবেঙ্গল) খায়রুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম এরিয়া ম্যানেজার আবদুল আজিজ, যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল গফুর, স্থানীয় ব্যবসায়ী নূর ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ।