শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

এবার বাড়বে চামড়ার দাম

রপ্তানি বন্ধের দাবি ট্যানারি মালিকদের

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

গত দুই বছর পানির দরে কোরবানির পশু থেকে সংগৃহীত কাঁচা চামড়া কেনার পর এবার দাম বাড়াতে রাজি হয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। এ জন্য তারা ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানি বন্ধ রাখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে শর্ত দিয়েছেন। এ ছাড়া এক সপ্তাহের মধ্যে কাঁচা চামড়া ঢাকায় প্রবেশের সুযোগ চেয়েছেন তারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, কোরবানির পশুর চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও সংগ্রহের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল। ওই সভায় এসব দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন ট্যানারি মালিকরা।

গতবার লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম গরুর প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা, বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবার সেটি বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা হতে পারে বলে জানা গেছে। সমন্বয় করে বাড়ানো হবে খাসি ও বকরির চামড়ার দামও।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, করোনা মহামারির প্রকোপ কমে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী কাঁচা চামড়ার চাহিদা বেড়েছে। সে কারণে ট্যানারি মালিকরা কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়াতে পারেন। আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে আজ মঙ্গলবার আসন্ন ঈদের কোরবানির পশুর চামড়ার দাম ঘোষণা করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চামড়া সংরক্ষণ ও সরবরাহের বিষয়ে আমাদের দাবি-দাওয়াগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, গতবারের তুলনায় এবার কাঁচা চামড়ার দাম বেশি হবে। তবে সরকারকে ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সুযোগ বন্ধ করতে হবে।

শাহীন আহমেদ আরও জানান, গত কোরবানির ঈদ থেকে এ পর্যন্ত কেস টু কেস ভিত্তিতে রপ্তানির সুযোগ দেওয়ার পর আড়াই কোটি বর্গফুট ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানি হয়েছে। এটি অব্যাহত রাখা হলে দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা বেড়েছে। 

পশুর শরীর থেকে রাসায়নিক ব্যবহারের মাধ্যমে পশম ছাড়িয়ে কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার পর সেটিকে ওয়েট ব্লু চামড়া বলে। চীন, কোরিয়া, ইতালি, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের চামড়ার বিপুল চাহিদা রয়েছে। তবে দেশীয় চামড়াশিল্পকে সুযোগ দিতে ১৯৯০ সাল থেকে কাঁচা চামড়া রপ্তানি বন্ধ রাখা হয়। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ধরে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম ব্যাপকভাবে কমে যায়। ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মাঝারি আকারের গরুর চামড়া গত দুই বছরে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অনেকে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মাটিচাপা দিয়েছেন। কেউ কেউ নদীতেও ফেলে দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কেস টু কেস ভিত্তিতে ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সুযোগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই রপ্তানি সুবিধা যাতে আর না বাড়ে সেটিই চাইছেন ট্যানারি মালিকরা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর