মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ইন্সপেক্টর সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দুদকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক রাজধানীর বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক তদন্ত) শেখ সোহেল রানার বিরুদ্ধে গ্রাহকের সাড়ে ২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করা হচ্ছে। গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলাটি রুজু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুদক সূত্র জানান, এর আগে শেখ সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ই-কমার্স গ্রহকদের টাকা আত্মসাৎ, বিদেশে পাচার ও দেশ ত্যাগের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদক থেকে সিদ্ধান্ত হয়। পরে সংস্থার উপপরিচালক মো. মোনায়েম হোসেনকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা অভিযোগটি অনুসন্ধান শেষে শেখ সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুদকে একটি মামলা করার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেন। অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সোহেল রানা নিজের পদ-পদবি আড়াল করে দুর্নীতির সম্পৃক্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ই-অরেঞ্জ নামে এমএলএম কোম্পানি খুলে প্রতারণা শুরু করেন। সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ নামে ও তার সংশ্লিষ্টদের নামে পরিচালিত ছয়টি ব্যাংকের ৩১টি হিসাবে মোট ২৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫০ টাকা জমা করে ও পরে তা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। তার এ টাকা অবৈধ প্রতীয়মান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও দুদক আইনে মামলা করার সুপারিশ করা হয়। এর আগে গত ১৬ মার্চ ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক সোহেল রানার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। দুদক জানায়, ঢাকায় সোহেল রানার চারটি ফ্ল্যাট, ৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি বাণিজ্যিক ভবন, বেশ কিছু জমির প্লট রয়েছে। এ ছাড়া এলিট ক্লাবের সদস্যপদ, চারটি ভিন্ন দেশে সম্পত্তি ও শত শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। চারটি ফ্ল্যাটের মধ্যে দুটি রাজধানীর নিকেতনে। সোহেল রানার মালিকানাধীন টিএন্ডজি নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি শাখা গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে, আরেকটি রয়েছে উত্তরার গরিব-ই-নেওয়াজ এভিনিউতে। রিয়েল এস্টেটের প্রতি বিশেষ ঝোঁক থেকে পূর্বাচলের সেক্টর ৩-এ একটি প্লট এবং খাগড়াছড়িতে রিসোর্টের জন্য জমি কিনেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মাথায় নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্দায় ওই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক হন। এখন পর্যন্ত দেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। মোট ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট প্রতারণার শিকার গ্রাহক মো. তাহেরুল ইসলাম ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই সময় তার সঙ্গে প্রতারণার শিকার আরও ৩৭ জন উপস্থিত ছিলেন। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ওই মামলা করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, আমানউল্ল্যাহ, বিথী আক্তার, কাউসার আহমেদ ও পুলিশের বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানা। ই-কমার্স প্ল্যাটফরমের স্বত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক সোহেলের বোন ও ভগ্নিপতি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর