বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
ব্লগার বিজয় হত্যা

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফয়সাল ভারতে গ্রেফতার

প্রতিদিন ডেস্ক

বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফয়সাল আহমদকে বেঙ্গালুরুতে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় পুলিশ। সূত্র : বিডিনিউজ। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, বেঙ্গালুরুর বোম্মনাহাল্লি থেকে গত ১ জুলাই ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ৩ জুলাই তাকে কলকাতায় নেওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করে ভারতের মাটিতে ফয়সালের জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের তথ্য মিলেছে। তাকে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) ডিআইজি মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, ফয়সল যে পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন, সেটা তারা আগেই জানতেন। সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছিল। প্রয়োজনীয় নথিও দেওয়া হয়েছিল। দেওয়া তথ্যে নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে জানিয়ে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান বলেন, ‘ফয়সালের প্রত্যর্পণের বিষয়ে কাজ করছি। দুই দেশের যে প্রসিডিউর আছে তা মেনে তাকে আনা হবে।’ উল্লেখ্য, মুক্তমনা লেখক, ব্লগার, প্রকাশক ও অধিকারকর্মীদের ওপর একের পর এক জঙ্গিবাদী হামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেটের সুবিদবাজারের নূরানী আবাসিক এলাকায় খুন হন ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় গণজাগরণ মঞ্চেরও সংগঠক ছিলেন। ওই মামলার রায়ে গত ৩০ মার্চ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত, তাদের মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭) একজন। বাকি তিনজন হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)। তাদের মধ্যে খায়ের ছাড়া বাকি দুজনও পলাতক।

এদিকে ভারতে যাওয়ার পর ফয়সাল সেখানে জঙ্গিদের সংগঠিত করতে কাজ করছিলেন জানিয়ে খবরে বলা হয়েছে, ‘ফয়সালকে জেরা করে জানা গেছে, তার নেতৃত্বেই আল-কায়েদার আসাম মডিউল নিজেদের ঘাঁটি মজবুত করেছে বরাক উপত্যকায়। হত্যাকাণ্ডের সময় ফয়সাল ছিল ডাক্তারির ছাত্র। জড়িয়ে পড়েছিল আল-কায়েদার ছায়া সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সঙ্গে। বিভিন্ন মাদরাসায় পড়ানোর আড়ালে জেহাদি মতাদর্শ ছড়িয়েছে ফয়সাল।’ ফয়সালের কাছে যে পাসপোর্ট পাওয়া গেছে, সেখানে কাছাড়া-ঘেঁষা মিজোরামের একটি ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। বেঙ্গালুরু থেকে তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স জোগাড় করেছেন। শিলচর থেকে বানিয়েছেন ভুয়া ভোটার কার্ড, যেখানে তার নাম শাহিদ মজুমদার। পুলিশের কাছে জেহাদি কার্যকলাপের অভিযোগ স্বীকার করে ফয়সাল জানিয়েছেন, ২০১৫ সালেই তিনি শিলচরে পালিয়ে এসেছিলেন। তবে ব্লগার হত্যায় জড়িত থাকার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর