শনিবার, ৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় জমজমাট হাট

♦ বিক্রি বেশি মাঝারি গরু ছাগল ♦ স্বচ্ছন্দে ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় জমজমাট হাট

আগামীকাল মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার কোরবানির পশুর হাটে গতকাল বেচাকেনা পুরোদমে জমে ওঠে। হাটগুলোয় দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক গরু, ছাগল, মহিষসহ বিভিন্ন গবাদিপশু। পশু বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় খুশি ব্যাপারী ও ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের অভিযোগ, বড় গরুর চেয়ে ছোট ও মাঝারি গরুর দাম বেশি। ফলে ছাগল ও ভেড়া বিক্রি বেড়েছে কয়েক গুণ। ইতিমধ্যেই ৪০ শতাংশ পশু বিক্রি হয়েছে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। তবে আজ ও কাল কোরবানির পশু বিক্রি চলবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। রাজধানীর আফতাবনগর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে অনেক গরু এসেছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। হাটে বিপুলসংখ্যক গরু থাকলেও তুলনামূলক বিক্রি কম। দাম অন্যান্যবারের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতা ও হাট-সংশ্লিষ্টরা। এই হাটে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে আসা মো. আলীম ব্যাপারী বলেন, ‘গ্রাম থেকে ১৬টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। দুপুর পর্যন্ত সাতটি গরু বিক্রি হয়েছে।’ পাবনা থেকে আসা আব্বাস খাঁ বলেন, ‘৬ লাখ টাকা দামের বড় গরুসহ নয়টি গরু নিয়ে এসেছি। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ছয়টি গরু বিক্রি হয়েছে।’ আফতাবনগর পশুর হাট পরিচালনাকারী সদস্য মো. আকাশ বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বজায় রাখতে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। গরু বিক্রি গতকালের তুলনায় আজ (শুক্রবার) বেড়েছে। আশা করছি কালকের (শনিবার) মধ্যে অধিকাংশ পশু বিক্রি হয়ে যাবে।’

মেরাদিয়া হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে উঠেছে বিপুলসংখ্যক গরু, ছাগল, মহিষ। চলছে বিকিকিনিও। বেশির ভাগ ক্রেতার অভিযোগ, গরু-ছাগলের দাম হাঁকা হচ্ছে চড়া। ফলে হাট ঘুরে পশু না কিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে অনেক ক্রেতাকে। খামারিদের আশঙ্কা, আশানুরূপ দামে বিক্রি করা না গেলে ফিরে যেতে হবে পশু বিক্রি না করেই।

জানতে চাইলে রামপুরা থেকে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি আট বছর ধরে এ হাটে আসেন। ঈদের আগে গরুর অপেক্ষাকৃত বেশি দাম পাওয়া যায়। এ কারণে তিনি দাম কমানোর বিপক্ষে। টাঙ্গাইল থেকে গরু নিয়ে হাটে আসা ব্যাপারী আসাদ মিয়া জানান, তিনি ১২টি গরু নিয়ে তিন দিন আগে হাটে এসেছেন। ছয়টি গরু বিক্রি করেছেন। মেরাদিয়া পশুর হাটের ইজারাদার আওরঙ্গজেব টিটু বলেন, ‘গত কয়েক দিনের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে। আজ সর্বোচ্চ বিক্রির আশা করছি। গত দুই বছর হাট পরিচালনায় আমাদের লোকসান হয়েছে। এবার তা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’ এদিকে হাটে গরুর চেয়ে ছাগল বিক্রি তুলনামূলক বেশি হয়েছে। ১০-২০ হাজার দামের ছাগলের চাহিদা বেশি। গতকাল দুপুরে মিরপুর সেকশন-৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গায় বসা অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, অনেকে একা কোরবানি দেন, সে জন্য একটি ছাগল নিয়ে যান। আর এই ছাগল কোরবানিতে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। দামও মানুষের সামর্থ্যরে মধ্যে রয়েছে।

হাটে ঢুকেই বাদামি রঙের ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট প্রজাতির ছাগল পছন্দ করেন চাকরিজীবী শাহানাজ বেগম। ১৭ কেজি মাংস হবে জানিয়ে সেটির দাম ১৭ হাজার টাকা চাইলেন বিক্রেতা। তবে শেষ পর্যন্ত ১৪ হাজার টাকায় ছাগলটি কেনেন শাহানাজ বেগম। তিনি বলেন, ‘সবকিছু বাদ দিলে ১৪ কেজির মতো মাংস থাকতে পারে। খুব একটা লোকসান হয়নি। তবে দেখতে অনেক সুন্দর ছাগলটি।’

বিক্রেতা আল-আমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কেনা বেশি। কিন্তু ক্রেতারা যে দাম দিতে চাইছেন তাতে পোষায় না। বুধবার ৩৫টা ছাগল এনেছি। আজ (শুক্রবার) পর্যন্ত ২০টা বিক্রি করেছি। ভালোই বিক্রি করেছি।’

সর্বশেষ খবর