শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

পাহাড়ে মহিষের শিং দিয়ে অলংকার

মো. জহুরুল আলম, খাগড়াছড়ি

পাহাড়ে মহিষের শিং দিয়ে অলংকার

মহিষের শিং থেকে বানানো হচ্ছে নারীদের অলংকার। পাহাড়ি নারীদের কাছে রয়েছে এসব বাহাড়ি অলংকার ব্যাপক কদর। হস্তচালিত যন্ত্রে বানানো হচ্ছে এসব অলংকার।

তবে মহিষের শিং সংকটের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প। তবু ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অলংকারের কারিগররা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার নিভৃত পল্লীগ্রামে ৪০ বছর ধরে মহিষের শিং থেকে বাহারি অলংকার বানাচ্ছেন পূর্ণজীবন চাকমা। সনাতনী পদ্ধতিতে শিং থেকে হস্তচালিত কাঠের যন্ত্র দিয়ে তৈরি করা হয় হাতের চুড়ি, আংটি, কানের দুল ও গলার চন্দ্রহার। কক্সবাজার ও বান্দরবান থেকে সংগ্রহ করা হয় মহিষের বড় শিং। এসব শিং কেটে বানানো হয় অলংকার। মহিষের শিংয়ের অলংকার পাহাড়ের ঐতিহ্যের ধারক।

নারীদের কাছে এসব অলংকারের কদর বেশি। অলংকার কিনতে আসা পূর্ণিমা ত্রিপুরা বলেন, ‘এখানে এসে এক জোড়া হাতের চুড়ি ও কানের দুল অর্ডার করেছি। দামও সাশ্রয়ী।

এসব অলংকার বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। শিং থেকে প্রস্তুত অলংকার আমাদের ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের প্রতীক।’ অনেক পাহাড়ি নারী দূরদূরান্ত থেকে অলংকার কিনতে এখানে আসেন। বিশেষত গ্রামের নারীরা অলংকারের মূল ক্রেতা। অলংকার শিল্পী পূর্ণ বিকাশ চাকমা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে মহিলারা মহিষের   শিংয়ের অলংকার অর্ডার দেন। তবে অনেক সময় শিং সংকটের ফলে কাজ বন্ধ থাকে। শিং থেকে অলংকার বানানো অত্যন্ত পরিশ্রমসাধ্য।’ ঐতিহ্য সুরক্ষায় বংশপরম্পরায় এ শিল্প ধরে রেখেছেন পূর্ণ বিকাশ চাকমা। এক জোড়া চুড়ি বানাতে দুই ঘণ্টা লাগে। তবে কাঁচামাল সংকটে বিলুপ্তির পথে মহিষের শিংয়ের অলংকার।

পূর্ণজীবন চাকমা আরও বলেন, ‘ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশায় আছি। তবে কাঁচামালের সংকটে পড়ে চাহিদামতো অলংকার বানাতে পারি না। মহিষের বড় শিং না পেলে অলংকার বানানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।’ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটি বাঁচবে বলে পূর্ণজীবন চাকমা মন্তব্য করেন।

সর্বশেষ খবর