রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

সেই জুয়েলের আছে একাধিক অস্ত্র, চায়ের দোকানেও প্রদর্শন

ভাইরাল অস্ত্র মধ্যরাতে থানায়

কুমিল্লা প্রতিনিধি

সেই জুয়েলের আছে একাধিক অস্ত্র, চায়ের দোকানেও প্রদর্শন

চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা শাহজালাল মজুমদারের ওপর হামলার সময় আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করেন মনিরুজ্জামান জুয়েল নামে এক ব্যক্তি। সেই জুয়েলের আছে একাধিক অস্ত্র। জুয়েল গ্রামের দোকানে চা খেতে বসলেও সেটি প্রদর্শন করেন। হামলার শিকার শাহজালাল মজুমদার বলেন, ‘জুয়েল শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর গ্রামের হাজি আলী আকবরের ছেলে। তিনি সব সময় এলাকায় বিভিন্ন     অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। গ্রামের দোকানে চা খেতে বসলেও অস্ত্র প্রদর্শন করেন। তার বিরুদ্ধে আদালতের একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। এর পরও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে না। আমি রবিবার (আজ) আদালতে মামলা করব।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ-যুবলীগের কোনো কমিটিতে জুয়েলের কোনো পদপদবি নেই। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় পরোয়ানা থাকায় গ্রেফতার থেকে বাঁচতে তিনি যুবলীগের পরিচয় ব্যবহার করছেন।’ এদিকে হামলার পর অস্ত্রহাতে ভাইরাল হওয়া ছবি দুটিতে দেখা যায়, মনিরুজ্জামান জুয়েল একই উপজেলার মিয়াবাজারের গ্রিন ভিউ রেস্টুরেন্টের সামনে এক হাতে অস্ত্র নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। তার আরেক হাতে সিগারেট। অন্য একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে হামলার দিন বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল থেকে চলে যাচ্ছেন তিনি। নাম-পরিচয় গোপন রেখে কুমিল্লা জেলা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা রাইফেলটির মডেল সঠিকভাবে বলতে পারেননি। তবে তাঁরা বলেছেন, জুয়েলের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি পয়েন্ট ২২ (.২২) সোল রাইফেল নয়। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে নিজ গ্রাম মান্দারিয়ায় ফিরছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার। বিকালে নালঘর পশ্চিম বাজার সামাদ মেম্বারের বাড়ির কাছে তাঁর গাড়ির গতি রোধ করে হামলা চালান মনিরুজ্জামান জুয়েলসহ সাত-আট জন। এ সময় শাহজালাল মজুমদার গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তার গাড়ি হকিস্টিক দিয়ে ভাঙচুর করেন। শাহজালাল মজুমদারের সমর্থকরা এগিয়ে এলে জুয়েল ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে বলেও জানা যায়। চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ছবিটি বৃহস্পতিবারের নয়, অনেক আগের। যখন শাহজালাল মজুমদারের সঙ্গে মনিরুজ্জামানের ভালো সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার তিনি ছবিটি আপলোড করেন।’ এদিকে জুয়েলের অস্ত্রসহ যে ছবি ভাইরাল হয়েছে সে অস্ত্রটি থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে অস্ত্রটি নিয়ে জমা দেন তার স্ত্রী ফারজানা হক। এ সময় ফারজানা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে তিনি লেখেন, ‘আমার স্বামী মনিরুজ্জামান হঠাৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার সম্মতিতে অস্ত্র ও গুলির নিরাপত্তার স্বার্থে থানা হেফাজতে রাখার অনুরোধ করছি।’ পুলিশ কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘ভাইরাল ছবিটা অনেক আগের। এর পরও যেহেতু এ ছবি নিয়ে সারা দেশে আলোচনা, তাই তার পরিবার অস্ত্রটি পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে। মিলিয়ে দেখলাম অস্ত্রটির লাইসেন্স আছে। চেক ডিজঅনারের একটি মামলায় জুয়েলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। তাই আমরা তাকে ধরার চেষ্টা করছি।’ অস্ত্রটি অত্যাধুনিক জিএসজি-৫ মডেলের রাইফেল। এটির নম্বর (অ৩৫৪৯১৬)। এর গায়ে লেখা ‘মেড ইন জার্মানি’।

 

সর্বশেষ খবর