সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাধা নেই সরকারি চাকরিজীবীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই সরকারি চাকরিজীবীদের। এক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো হলেও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে স্বাভাবিক বিনিয়োগের মতোই সরকারি চাকরিজীবীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবেন। সরকারি চাকরিজীবীরা যে পরিমাণ বিনিয়োগ করবেন তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে হবে। পাশাপাশি আয়কর রিটার্নেও উল্লেখ করতে হবে। সম্প্রতি পুঁজিবাজার সম্পর্কিত একটি কমিটি এ বিষয়ে মতামত দিয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিজীবীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আইনি বাধা নেই। যে কোনো চাকরিজীবী চাইলে পুঁজিবাজারে নিজেদের নামে বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। সেখানে নিয়মিত  লেনদেনও করতে পারবেন। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যদের      নামেও বিনিয়োগে কোনো বাধা নেই। পুঁজিবাজার দেশের শিল্প বিনিয়োগে মূলধন সংগ্রহের বড় উৎস। দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রেখে চলেছে পুঁজিবাজার। সারা পৃথিবীতেই শিল্প মূলধন সংগ্রহে পুঁজিবাজার ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী ও স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে পুঁজিবাজার। তবে এ বাজারে সরকারি চাকরিজীবীদের বিনিয়োগ নিয়ে বিভ্রান্তি ছিল। সরকারি চাকরিজীবীরা বিনিয়োগ করতে পারবে না এমন বিভ্রান্তির কারণে অনেকে বিনিয়োগ করেননি। এ বিভ্রান্তির অবসান করেছে বর্তমান কমিশন। কমিশনের একটি কমিটি তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, আইনি কোনো নিষেধ নেই সরকারি চাকরিজীবীদের পুঁজিাবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। অন্য বিনিয়োগকারীদের মতোই চাকরিজীবীরা তাদের বিনিয়োগ করতে পারবেন বিনা প্রশ্নে। বরং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে চাকরিজীবীরা কর রেয়াত পাবেন। ২০১০ সালে পুঁজিবাজার নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশেও বলা হয়, সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তারা শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারবেন। বিনিয়োগের জন্য বিও অ্যাকাউন্ট থাকবে এবং বিও অ্যাকাউন্ট নম্বরসহ কত টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ করা হয়েছে তা নিজ নিজ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে এবং আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ক্ষেত্রে কোনো চাকরিজীবী বা তার কোনো পেশা দেখা হয় না। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নেওয়া প্রত্যেকের অধিকার রয়েছে। শিল্প খাতের মূলধন জোগাতে পুঁজিবাজার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। সরকারি কর্মকর্তা আর সাধারণ জনগণ যে-ই হোক আমাদের কাছে সবাই বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচিত। আমাদের কাছে যেকোনো বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ করতে কোনো বাধা নেই। সরকারি যারা চাকরিজীবী আছেন তারা চাইলে বিনিয়োগ করতেই পারেন। আমরা সব স্তরের বিনিয়োগকারীকেই আহ্বান জানাচ্ছি। সেক্ষেত্রে কারোর বিনিয়োগে কোনো বাধা নেই। সবাই বিনিয়োগ করতে পারবেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধির জন্য সবার পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত। যদি কেউ মনে করেন সরকারি চাকরিজীবীদের বিনিয়োগ করা যাবে না সেটা সত্য নয়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মশিউর রহমান বলেন, সরকারি নিয়মকানুন-বিধিবিধানে যা আছে এর বাইরে আমরা যাব না। আমরা আইন-কানুন খতিয়ে দেখেই চলব।

অর্থনীতিবিদ পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবেন না, এমন কোনো আইন নেই। তারা নির্দ্বিধায় বিনিয়োগ করতে পারবেন। আর বিধি মেনে যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। সেখানে আলাদা কোনো বিষয় থাকে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর