মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বাগেরহাটে এখনো পানিবন্দি মানুষ টাঙ্গাইলে ভাঙনের হুমকিতে বাজার

প্রতিদিন ডেস্ক

বাগেরহাটে এখনো পানিবন্দি মানুষ টাঙ্গাইলে ভাঙনের হুমকিতে বাজার

দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হলেও বাগেরহাটে এখনো কয়েক শ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। পাঁচ দিন ধরে এখানে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ধুবড়িয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বলারামপুর ডিজিটাল বাজার এলাকা হুমকির মুখে রয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌরসভাসহ উপকূলীয় তিন উপজেলা মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও শরণখোলার ১৮টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম পাঁচ দিন ধরে দিনে দুবার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এতে অন্তত ৩০০ মাছের খামার ও পুকুর তলিয়ে গেছে। মোরেলগঞ্জ বাজারসহ  পৌরসভার ফেরিঘাট থেকে পুরনো থানা ঘাট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে হু-হু করে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এখনো মোরেলগঞ্জ পৌরসভার সড়ক, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি পানিতে প্লাবিত রয়েছে। মোরেলগঞ্জ ও রামপাল উপজেলায় ৮টি করে ১৬টি ইউনিয়নসহ শরণখোলা উপজেলায় বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা সাউথখালী ও খোন্তাকাটা ইউনিয়নের জলাবদ্ধতায় কয়েক শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে।

টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ধুবড়িয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বলারামপুর ডিজিটাল বাজার এলাকার অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। সরেজমিন দেখা গেছে, ধুবড়িয়া ইউনিয়ন সদর এলাকা থেকে বলারামপুর এলাকা খুব বেশি দূরত্ব না হলেও যাতায়াত ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর দুর্গাবাটি উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৭০০ চিংড়ি ঘের ও কাঁকড়া খামার ভেসে গেছে। শুধু মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এতে কাঁকড়া চাষি ও মৎস্য ঘের মালিকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। ১৪ জুলাই শ্যামনগর উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর ভেঙে যাওয়া দুর্গাবাটি উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধটি সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ৫ দিনেও মেরামত করতে পারেনি।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর উপকূলে পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পানির চাপ নিম্নমুখী থাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদ-নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল দুপুরে জোয়ারের চাপ বেশি না থাকায় পানির চাপ কম ছিল। তাই মানুষের জীবনযাত্রাও ছিল স্বাভাবিক। তবে কয়েক দিন ধরে জোয়ারের পানির অস্বাভাবিক চাপে সাগর মোহনা সংলগ্ন পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাবনাবাদ নদীর চর বালিয়াতলী পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

নোয়াখালী : পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে গত তিন দিন থেকে নোয়াখালীর উপকূলীয় হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৪-৫টি ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে আছে। ভেসে গেছে বিভিন্ন পুকুর ও প্রজেক্টের মাছ এবং তলিয়ে গেছে নিঝুমদ্বীপ মূল সড়কের ২ কিলোমিটার রাস্তা ও বীজতলা। গতকাল বিকাল থেকে পানি কিছুটা নেমে গেলেও পর্যাপ্ত পানি রয়ে গেছে।

খুলনা : খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে ২০টি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ১৬ জুলাই এসব স্থানে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ১ মিটার বেশি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। গত দুই দিনে সব পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে। খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

বরিশাল : বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত দুই দিনের তুলনায় রবিবার পানির স্তর অনেক কমেছে। তবে এখনো ৬টি নদীর ৫ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের মিটার গেজ রিডিং থেকে এ তথ্য জানা গেছে। রিডিং অনুযায়ী, শনিবার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর