বুধবার, ২০ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
কৃষি

কুড়িগ্রামের লটকন বিদেশে রপ্তানির প্রত্যাশা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের লটকন বিদেশে রপ্তানির প্রত্যাশা

কুড়িগ্রামে লটকন চাষে সাফল্য এসেছে কৃষকের। জেলায় এবার ব্যাপক হারে চাষ করা হয়েছে লটকন ফল। চলতি বছর এর ফলন বিপর্যয়ের কারণে কৃষকরা চিন্তিত হলেও লাভের আশা রয়েছে দ্বিগুণ। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই ফল চাষ করতে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। একটু যত্ন এবং আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করতে পারলেই ব্যাপক ফলন হয় বলে কৃষকরা জানান। কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলায় লটকন চাষ করেছেন সহস্রাধিক কৃষক। আর লটকন ফলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ী। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে সদর উপজেলায়। সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের সন্ন্যাসী গ্রামের কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, আমাদের এ জেলায় সবচেয়ে বেশি লটকন চাষ হয়েছে। জেলার চাহিদা পূরণ করে আমরা প্রতি বছর বাইরের জেলাগুলোতেও লটকন পাঠাই। এখানকার লটকনের স্বাদ, সাইজ ও মান ভালো হওয়ায় প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা ছুটে আসেন কিনতে। গত বছর আমরা ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত মণ বিক্রি করি। এবার লটকনের মণ ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। অর্থাৎ এবার দাম অনেক বেশি কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এবার লটকনের ফলন ভালো হয়নি। ফলন ভালো হলে চাষিরা প্রচুর পরিমাণে লাভবান হতো।

চাষি জয়নাল মিয়া জানান, শুনেছি দেশের বাইরেও লটকনের চাহিদা রয়েছে। সরকার যদি চেষ্টা করত তাহলে আমাদের লটকন বাইরে বিক্রি করে আমরা আরও বেশি লাভবান হতে পারতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য লটকন চাষে স্থানীয় কৃষি বিভাগ সঠিকভাবে পরামর্শসহ দেখাশোনা করে না। এ জন্য আমরা ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছি। কাঁঠালবাড়ী বাজারের পাইকার ও দেবালয় গ্রামের ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম জানান, আগে আমরা নিজেরাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে গিয়ে লটকন বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধির কারণে তা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে এক খাঁচা লটকনের দাম ছিল ১০০ টাকা, এখন তা পরিবহনে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০০ টাকায়। এ ছাড়াও লটকন সংগ্রহ করতে শ্রমিকদের ১০০ টাকা দিলেই হতো। এখন দিতে হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। ফলে আগের তুলনায় কম লাভবান হচ্ছি। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শামসুজ্জামান বলেন, এ জেলার মধ্যে সদর উপজেলা, রাজারহাট, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও উলিপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকন চাষ হচ্ছে। প্রাপ্যতা ও মান অর্জন করতে পারলে অবশ্যই বিদেশে লটকন রপ্তানি করা সম্ভব।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর