শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

কোনাবাড়ীতে মাতম, ছয়জনের দাফন সম্পন্ন

গাজীপুর প্রতিনিধি

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুরে বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ছয়জনের বাড়ি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীর জয়েরটেকে চলছে মাতম। এলাকাবাসী সান্ত্বনায়ও নিহতদের স্বজনদের আহাজারি থামছে না। গতকাল সকালে তাদের জানাজায় গাজীপুরের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের জানাজা শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যার যার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কোনাবাড়ী জয়েরটেক খাজা মার্কেট এলাকায় একটি খোলা মাঠে ছয়জনের লাশ পাশাপাশি রেখে দুটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মণ্ডল, জিসিসির সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এম নিয়াজ উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত হোসেন সরকার, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মো. কামরুল আহসান সরকার রাসেলসহ হাজার হাজার মানুষ শরিক হয়।

গতকাল সকালে নিহত রুহুল আমিন ও হারুন অর রশিদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় আবেগঘন পরিবেশ। রুহুল আমিন ও হারুন মামাতো-ফুফাতো ভাই। হারুনের মা প্রিয় সন্তানের জন্য আহাজারি করছেন। বাকরুদ্ধ স্ত্রী বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তার দুটি ছেলে ফাহিম (১২) ও মাহিম (৫) ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। বাড়ির পাশে পাশাপাশি দুই ভাইয়ের কবর খোঁড়া হয়েছে।

নিহত জালাল উদ্দিন ঠান্ডুর (৬০) বাড়ি গিয়ে দেখা যায় শতায়ু মা করদজান, স্ত্রী রোকেয়া বেগম, সন্তান ও বোনেরা বিলাপ করছেন। প্রিয়জন হারানোদের নানাভাবে সান্ত্বনা দিচ্ছেন প্রতিবেশীরা। স্বামীহারা রোকেয়া বেগম জানান, তাঁর স্বামীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কথা হয়। তখন তারা পদ্মা ব্রিজের কাছাকাছি ছিলেন। সাড়ে ১২টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পান তাঁর মেয়ের মাধ্যমে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উজিরপুরের নতুন শিকারপুর সংলগ্ন মহাসড়ক অতিক্রমকালে মাইক্রোবাসের একটি চাকা পাংচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকামুখী দ্রুততগামী মোল্লা পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। পরে হাসপাতালে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। একই এলাকার নয়জন পদ্মা সেতু দেখে কুয়াকাটা যাচ্ছিলেন। রাতেই নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল ভোর ৫টার দিকে লাশ গাজীপুরের কোনাবাড়ী নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদের একনজর দেখার জন্য এলাকার মানুষ ভিড় করে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- জয়েরটেক খাজা মার্কেট এলাকার উজিরুল ইসলামের ছেলে রুহুল আমিন (৪২), হাজি জব্বারের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৩), রহম আলীর ছেলে ঠান্ডু মিয়া (৬০), হাসেন আলীর ছেলে আবদুর রহমান (৪৫), হারুন অর রশিদ বাদশা (৪০), আহাকী নদীর পাড় এলাকার তমিজ উদ্দিনের ছেলে হাসান সরকার (৩৬)।

সর্বশেষ খবর