রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

টেন্ডার কারসাজিতে ডেসকোর ১০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানির (ডেসকো) একটি টেন্ডারে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে। এতে গচ্চা যাচ্ছে ডেসকোর প্রায় ১০ কোটি টাকা। ডেসকোর কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে কারসাজিতে মূল অভিযোগের তীর উঠেছে সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, টার্ন-কি ভিত্তিতে নতুন টঙ্গী গ্রিড ১৩২/৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনের জিআইএস থেকে ৩৩ কেভি এআইএসের ডিজাইন, সরবরাহ, ইনস্টলেশন, পরীক্ষা ও কমিশনিংয়ের জন্য জানুয়ারিতে ২৩ কোটি টাকার (ভ্যাট-ট্যাক্স বাদে) প্রাক্কলন করে দরপত্র আহ্বান করে ডেসকো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারমূল্য অনুযায়ী ওই কাজের জন্য সরবরাহকৃত পণ্যের প্রকৃত মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ কোটি টাকার মতো। এমনকি সংশ্লিষ্ট পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্সও বাংলাদেশে তাদের বিভিন্ন প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানকে ওইসব পণ্যের দর প্রস্তাব করেছে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার মধ্যে। ডেসকোর দরপত্রে সিমেন্স বাংলাদেশের ছয়জন প্রতিনিধি ও অন্য দুটি কোম্পানিসহ আট প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। সাবস্টেশনটি সিমেন্সের পণ্য দিয়ে তৈরি হওয়ায় ও স্পেসিফিকেশনে মিল না থাকায় অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র সরাসরি বাতিল হয়ে যায়। পরে সিমেন্সের ছয়জন প্রতিনিধির দরপত্র মূল্যায়ন করা হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ১৪-১৫ কোটি টাকার নিচে দর দিয়ে দরপত্র দাখিল করলেও ২৩ কোটি টাকায় কাজটি করার জন্য আটলান্টা স্টিল নামক কোম্পানিটিকে চূড়ান্ত করা হয়। কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, ছয় প্রতিষ্ঠানই সিমেন্সের প্রতিনিধি হলেও শুধু আটলান্টা স্টিলকে সঠিক কাগজপত্র সরবরাহ করে সিমেন্স বাংলাদেশ। বাদ পড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ, আটলান্টা স্টিলকে তিন দিন আগে সব ধরনের কাগজপত্র সরবরাহ করলেও বাকি পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে শেষ মুহূর্তে কাগজপত্র দেয় সিমেন্স। তখন যাচাই করার সময় ছিল না। তাদের সরবরাহ করা ডকুমেন্টে ঘাটতি ছিল। প্রায় ১০ কোটি টাকা ভাগাভাগি করতে এ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ দরে কাজটি পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ ব্যাপারে সিমেন্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মোবাইলে যোগাযোগ করলে ফোনে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি ইমেইলে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে অফিসে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

দরপত্রে প্রায় ১০ কোটি টাকা বেশি প্রাক্কলন প্রসঙ্গে ডেসকোর নির্বাহী পরিচালক (প্রকিউরমেন্ট) প্রকৌশলী এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের প্রকিউরমেন্ট রিভিউ কমিটি সবকিছু দেখে দর চূড়ান্ত করে। আগে কী দামে কেনা হয়েছে, ডলারের দাম কত বেড়েছে, অন্য কোম্পানিগুলো কী দরে কিনছে, গত বছর কী দামে ওই পণ্য কেনা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এখন দাম কত ইত্যাদি দেখেই দর চূড়ান্ত করা হয়। গত বছরও একই কাজ ডেসকোয় হয়েছে। সেই দরও বিবেচনা করা হয়েছে। সিমেন্স যদি কোনো প্রতিষ্ঠানকে ১০ কোটি টাকা কম দর দেয়, তাহলে বিষয়টা দেখার আছে।’

সর্বশেষ খবর