করোনার টিকা সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা না হলেও অনেকটা সুরক্ষা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। গতকাল রাজধানীতে হোটেল অরনেটে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, মহামারি দেখা দেওয়ার পর অনেক গবেষণা করে টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে। নিশ্চয় এটাতে উপকার আছে। সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা না হলেও অনেকটা সুরক্ষা দিচ্ছে। এবার যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না।

তিনি জানান, করোনা মহামারির চলমান চতুর্থ ঢেউয়ে মৃতদের ৭০ শতাংশই টিকা নেননি। টিকা নেওয়ার পর মারা যাবে না এমন কথা কখনো বলা হয়নি। তবে কিছুটা হলেও সুরক্ষা দেবে। অনেকে মডার্না টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাননি, কবে নাগাদ পাবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে টিকা অবশ্যই পাবে। ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

করোনায় চারজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৪৩০ : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৪৩০ জনের। যা আগের দিন ছিল ৪৪৬ জন। এ হিসাবে আগের দিনের তুলনায় করোনা সংক্রমণ কমেছে তবে মৃত্যুর সংখ্যা একই রয়েছে। একইসঙ্গে কমেছে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হারও। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় এই হার কমে হয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের কভিড ইউনিটের পরিচালক ডা. মো. জাকির হোসেন খানের স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে ২৪ ঘণ্টার করোনা সংক্রমণ-মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ৬ হাজার ১১৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬ হাজার ১০টি। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হলো ২০ লাখ ১ হাজার ৭৭৫ জনের শরীরে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২৭০ জন। যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ৪৩৪ জন। আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় পরের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের মধ্যে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা কমেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত হলেন ১৯ লাখ ৩৫ হাজার ৯৬৩ জন। সংক্রমণ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ৯৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে দেশে চারজনের মৃত্যু হওয়ায় এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৯ হাজার ২৬৬ জনের। সংক্রমণ বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১৮ হাজার ৬৮২ জন পুরুষ, ১০ হাজার ৫৮৪ জন নারী। শতকরা হিসেবে পুরুষের মৃত্যু হার ৬৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ, নারী মৃত্যুর হার ৩৬ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮৮০টি পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৬১টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব ৬৬২টি।